Your slogan here
Welcome
Here you can
enter your
own text


শুরুতেই একটি অতিকথনের ঘটনা। টেলিফোন আবিষ্কারক আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেলের চাকর তার অনুপস্থিতিতে একবার পৃথিবীর প্রথম ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেছিলো। আর তাতে তিনি রেগে গিয়ে তার এক মাসের বেতন কর্তন করেন। তারপর চাকর বেতন কাটার কারণ জানতে চায়। -মনিব আমার অপরাধ ? -তুমি সীমা অতিক্রম করেছ। -কিসের সীমা ? -কথা বলার সীমা। কিন্তু আমাদের দেশের রাজনীতিবিদ আর আমলাদের অতিকথনে সরকার বা দলের অবিভাবক মনে হয় শুনেও না না শোনার ভান করে থাকেন। সম্প্রতি বাজেট নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের পরও ব্যাংক হিসাবে আবগারি শুল্ক বাড়ানোর বিষয়ে অনড় অর্থমন্ত্রী। এ কারণে তার উদ্দেশ্যে সংসদে কয়েকদিন আগে ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, আপনি একগুঁয়েমি সিস্টেম বন্ধ করেন আর কথা কম বলেন। আসলেই কিন্তু অর্থমন্ত্রীর কিছু কথাবার্তায় সরকারকে অনেকবার বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়েছে। অথচ এ নিয়ে সমালোচনায় কেউ কেউ গোস্বা করেছেন মনে হয়। আসলে এটা তো শুধু আমদের অর্থমন্ত্রী নয়, তেল মারার রাজনীতির সংস্কৃতি এ দেশে একদিনে হয়নি। স্বাধীনতার পর থেকে এ দেশে যে যেভাবে পারছে তেল মেরেই যাচ্ছে। রাজনীতিবিদদের বলতে শুনি, তারা নাকি মুজিব আদর্শে রাজনীতি করেন। কিন্তু আমি তো জানি মুজিব হলো সেই শক্তির নাম, যে কোনোদিন অন্যায়ের সাথে আপোস করেনি। আর সারাজীবন ন্যায্য কথা বলা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকরা আজকাল তেলের পুকুর কেটে বসে আছেন। এসব তেলবাজদের খপ্পরে পড়ে আমাদের বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে, আমরা একবারও কি ভাবি? তবে ইদানীং রাজনীতিবিদেরা, আমাদের এমপি মন্ত্রীরা যখন জনগণের পক্ষে কিছু বলেন, ভালো লাগে। সাধুবাদ জানাই যারা নিজেদের সমালোচনা করতে শিখেছেন তাদেরকে। একটা বিষয় কিছুতেই বোঝলাম না। আয়কর হবে আয়ের উপর। সঞ্চয়ের উপর বা লেনদেনের উপর আয়কর কি করে হয়? এত বছর চুপচাপ থেকে এখন সরকারদলীয় সাংসদেরাও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আইন কার্যকরের কঠোর বিরোধিতায় নেমেছেন। অন্য দলের সাংসদেরাও এ আইন নিয়ে এত দিন বলিষ্ঠভাবে কোনো কথা বলেননি। অথচ মন্ত্রিসভা ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর জাতীয় সংসদে এই আইন পাস হয় ২০১২ সালের নভেম্বরে। প্রথম থেকেই একশ্রেণির ব্যবসায়ী ভ্যাট আইনের বিরোধিতা করছিলেন। কিন্তু রাজনীতিবিদেরা কখনোই এর মধ্যে ঢোকেননি। এবারের ছবি কিন্তু আলাদা। জাতীয় সংসদে আজকাল নতুন ভ্যাট আইন ও বাজেট নিয়ে সাংসদেরা মুখর হচ্ছেন। পিছিয়ে নেই জাতীয় পার্টির সংসদেরাও। এমনকি মন্ত্রীরাও সমালোচনা করছেন । এর মধ্যে এক তেলবাজ সরকারদলীয় সাংসদ আওয়ামী লীগের সাংসদদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘বাজেট নিয়ে আমরাই যদি সমালোচনা করি, বিরোধী দল কেন করবে না। অর্থমন্ত্রীকে কোণঠাসা করতে কথা বলা হচ্ছে। তিনি তো আমার দলেরই মন্ত্রী। তার কোনো ভুল থাকলে প্রধানমন্ত্রীই ঠিক করে দেবেন’। এর নাম রাজনীতি? রাজনীতি মানে শুধু ভোটে জেতা আর দলের লাভ? রাজনীতি মানে জনগণের কিছু নয়? জনগণ এখন আগের মতো এতোখানি বোকা আছে কিনা তা পরিস্থিতি বলে দেবে। তবে দেশের বড় রাজনীতিবিদদের বলবো, দয়া করে নিজের লাভের কথা ভেবে রাজনীতিকে ব্যবসায় পরিণত করবেন না। কিছুদিন পর আপনারা ইতিহাসে বিকৃত এবং বিক্রিত চরিত্র হবেন। ঠাণ্ডা মাথায় ভেবে দেখবেন? আর সব রাজনীতিবিদ একই কথা বলে উপরের সাহেবদের তেল মারে। মনে হয় সব কোর্স করা তেলবাজ। আর নখল করতে সবাই ওস্তাদ। এ বিষয়ে মজার একটি ঘটনা বলি। লেখক প্রেমেন্দ্র মিত্র তখন চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ করছেন। তার নতুন একটা ছবি মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু ওই ছবির কাহিনী নিয়ে কথা উঠেছে। বুদ্ধদেব গুহ পত্রিকায় বিবৃতি দিয়েছেন যে, কাহিনীটি তার লেখা। প্রেমেন্দ্র মিত্র নাকি লেখাটি নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন। সবাই উদগ্রীব, প্রেমেন্দ্র মিত্র এখন কী বলেন! কিন্তু প্রেমেন্দ্র মিত্র কিছু বলছেন না। কিছুদিন পর প্রেমেন্দ্র মিত্র বিবৃতি দিলেন। তিনি বললেন, ‘চলচ্চিত্রের কাহিনীটি আমার না সেটা সত্যি, তবে বুদ্ধদেব গুহ যেখান থেকে গল্পটি নিয়েছে, আমিও ওই একই জায়গা থেকে নিয়েছি।’ আমরা জানি, এ দেশের ব্যাংকগুলোকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ, এর মধ্যে ঋণ অবলোপনও আছে। কার টাকা অবলোপন করছেন? মানুষের টাকা লুট হচ্ছে, বিদেশে পাচার হচ্ছে। এসব নিয়ে অর্থমন্ত্রীর কোনো বক্তব্য নেই। লুটপাট কারা করছে? এরা কি আপনাদের চেয়ে, সরকারের চেয়ে শক্তিশালী? কেন তাদের আইনের আওতায় আনবেন না? সোনালী, জনতা—এসব ব্যাংকের করুণ অবস্থা। হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের সঙ্গে কারা জড়িত, সৎ সাহস থাকলে সংসদে তাদের নাম প্রকাশ করুন। শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির পর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের প্রতিবেদনে সবই নিজেদের লোকের নাম এল। ব্যবস্থা নিলেন না কেন? আমি অবাক হয়ে কাগজে পড়েছি, ব্যাংকে আমানতকারীদের হিসাবের ওপর আরোপ করা ‘আবগারি শুল্ক’ নামটাই এবার বদলে ফেলার ঘোষণা দিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আমাদের অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ব্যাংক হিসাবে একটা তথাকথিত আবগারি শুল্ক আদায় করা হয়। এর নামটা ঠিক নয়, তা পরিবর্তন হবে। পত্রিকার খবর অনুযায়ী, সরকার ও আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, ব্যাংক হিসাবে বাড়তি আবগারি শুল্ক আরোপের বিষয়টি বাজেটে থাকা উচিত নয়—এ বিষয়ে সরকারি দলের নেতারা একমত। বাজেট পাসের সময় এই মতের প্রতিফলন থাকছে, এটাও প্রায় নিশ্চিত। এরপরও সরকারদলীয় সাংসদ ও গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের এভাবে অর্থমন্ত্রীকে লক্ষ্যবস্তু করার পেছনে ভিন্ন কোনো বার্তা আছে কিনা সে প্রশ্নও রয়েছে। আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সরকারের কোনো মন্ত্রীকে লক্ষ্যবস্তু করা হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা ভালোভাবে নেন না। এর আগে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে সংসদে সমালোচনা শুরু হলে প্রধানমন্ত্রী তাতে হস্তক্ষেপ করেন। কিন্তু অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সমালোচনার বিষয়ে হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটেনি। এক বছরে মোটা চালের দাম ৪৭ শতাংশ বেড়েছে। মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। মানুষ চাল কিনতে পারছে না। তিনি বলেন, সুশাসন না থাকলে মানুষ উন্নয়নের সুফল পাবে না। আর বরমান সরকার উন্নয়নের মহাসড়কে নাকি দুর্যোগের মহাসড়কে আছে, সেটা এখন বিবেচনার বিষয়। খবরের কাগজে পড়লাম, আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের ঘোষণা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা পিছিয়ে দেওয়া হতে পারে। পুরোনো আইনটিই আরও এক-দুই বছর বহাল রাখা হতে পারে। নতুন আইনটি বহাল রাখা হলেও যেসব ক্ষেত্রে দাম বাড়তে পারে, সেসব পণ্য ও সেবাকে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে। কিন্তু আমার মনে হয়, সরকারের উচিত হয় নতুন আইনটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করুক, না হয় পরাজয় মেনে নিয়ে পুরোনো আইনেই ফিরে যাক। হ-য-ব-র-ল অবস্থায় নতুন আইন বাস্তবায়ন করার কোনো মানে নেই। আর ইতিমধ্যে সম্পূরক শুল্ক বহাল রাখা এবং ভ্যাটমুক্ত সীমা বাড়িয়ে আইনটি অনেক দুর্বল করা হয়েছে। মূল আইনের দর্শনও নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। তাড়াহুড়ো করে, সমঝোতা করে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করা ঠিক হবে না, যা আমাদের আরও পিছিয়ে দেবে। প্রবল স্রোতের মুখে ভেঙে যাওয়া বাঁধে বালুর বস্তা দেওয়ার কোনো মানে নেই। আর উপরের বাবুরা কথা কম বললেই ভালো হয়; অল্প কথায় কাজ হলে, বেশি কথার দরকার কি? শিক্ষা সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বলে যাওয়া কথা দিয়ে শুরু করছি। তিনি লিখেছেন, “শিখিবার কালে, বাড়িয়া উঠিবার সময়ে, প্রকৃতির সহায়তা নিতান্তই চাই। গাছপালা, স্বচ্ছ আকাশ, মুক্ত বায়ু, নির্মল জলাশয়, উদার দৃশ্য—ইহারা বেঞ্চি এবং বোর্ড, পুঁথি এবং পরীক্ষার চেয়ে কম আবশ্যক নয়” (শিক্ষাসমস্যা)। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে যখন পড়ি, তখন ধানমন্ডির নামকরা এক কোচিং সেন্টারে পড়াতাম। আমি তখন লক্ষ করেছি, আমাদের দেশে বর্তমানে অতি সচেতন এক অভিভাবক শ্রেণি তৈরি হয়েছে; যারা সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভয়াবহ পর্যায়ের সিরিয়াস। তারা চান তাদের সন্তান যে করেই হোক ক্লাসে প্রথম হবে, গোল্ডেন এ প্লাস পাবে, মেডিক্যাল-বুয়েটে পড়বে এবং তারা তাদেরকে ধন্য করবে। তাদের এই নিম্ন পর্যায়ের সচেতনতায় আমরা ভালো কিছু তো হারাচ্ছি, তাতে দেশ কোন উটের পিঠে যে চড়াচ্ছি তা আর বলতে! আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ত্রুটি যেমন আছে, তেমনি গলদ আছে শিক্ষা বিষয়ে সামাজিক ও পারিবারিক ভাবনা চিন্তায়। আমরা মোটেই বুঝতে রাজি নই, একটি দেশের বা জাতির নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার তেমন কোনো বড় ভূমিকা রাখেন না। আপনি দেশের সেরা মানুষের তালিকাটায় চোখ বুলান। সেখানে যাদের নাম দেখতে পাচ্ছেন, তারা ডাক্তার? তাহলে আমরা কেনো এই মূর্খ সংস্কৃতির চর্চা করছি গত কয়েক দশক ধরে। কেনো আমরা এক রকম জোর করে সেরা মেধাবীদের ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার বানানোর দিকে ঠেলছি? পৃথিবীর কোন দেশে আছে এটা? না, কোনো দেশে নেই। আর আমরা সেকারণেই পিছিয়ে পড়ছি দারুণভাবে। এ দেশে জন্মালে আইনস্টাইনকে আমাদের এই শিক্ষার অপসংস্কৃতি তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বানাতো। আমাদের দেশের উইলিয়াম শেক্সপিয়ার, অ্যারিস্টটল, জর্জ বার্নাডস, জন পল ডি জোরিয়া, জ্যাক মা যারা জন্ম নেয়; এদের আমরা বিসিএস ক্যাডার বানিয়ে দেশ উদ্ধার করছি। না, বিসিএস ক্যাডার হবে, কিন্তু সেটা কোনো মানুষের স্বপ্ন হতে পারে না। দেশের সব মানূষ বিসিএস ক্যাডার হলে আমাদের জাতির কী আসবে যাবে? আমরা একবারও ভাবছি না, আমরা কোথায় নিয়ে যাচ্ছি দেশকে। আড্ডায় বাংলাদেশ নামে যারা আজকে নাক সিটকায়, তারা কেউ ভাবছে না, বাংলাদেশ মানে আমি, আপনি এবং যে নাক সিটকালো; আমরা সবাই। দেশকে উঁচুতে নিতে হলে মেধাবীদের সেভাবে তরি করতে হবে। গোল্ডেন এ প্লাসে কিছু হবে না। শিক্ষা ব্যবস্থার এতো গলদ আর ছাইপাস স্বপ্ন দেখা এ প্রজন্ম কী দিবে ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে? বাচ্চা ছেলেমেয়েদের সিলেবাস দেখলে মাথা ঘুরে যায়। চিলির রাজধানীর নাম কেনো মুখস্থ করবে এরা? পৃথিবীর সেরা শিক্ষাব্যবস্থা হিসেবে খ্যাত ফিনল্যাণ্ডের স্কুলে যখন প্রথম ৬ বছর কোন পরীক্ষা হয় না এবং ১০ বছরের স্কুলজীবন শেষে প্রথম বড় ধরনের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, তখন বাংলাদেশে ফার্স্ট টার্ম, মিড টার্ম, বার্ষিক, পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি’র মত শত শত পরীক্ষার মুখে শিশুদের মুখোমুখি করে দেয়া হয়; যা তাদেরকে কিছু শেখার আগেই প্রতিযোগিতায় ঠেলে দেয়। জাপান এবং কোরিয়ায় যখন ম্যাথ এবং প্রোবলেম সলভিং-এর উপর ফোকাস করে ধীরে ধীরে শিশুদের বড় করা হয়, তখন আমাদের শিশুদের মুখস্ত করার যুদ্ধে নামতে হয়। আর জামার্নিতে শিশুদের স্কুলের প্রথম দিন যখন শিক্ষাসামগ্রীর সাথে খেলনা, ফুল ও মিষ্টান্ন সম্বলিত "স্কুলকোণ" নামক বিশেষ উপহার দেয়া হয়, তখন আমাদের স্কুলে লম্বা বইয়ের লিস্ট ধরিয়ে দেয়া হয় এবং অন্য একজনকে এই ভারী বইয়ের ব্যাগ বহন করে স্কুলে দিয়ে আসতে হয়। কী ভয়াবহ ব্যাপার! যতদূর জানি, পড়ার অধিক চাপ হতে মুক্তি দিতে চাইনিজ স্কুলে বাধ্যতামূলক একঘণ্টা বিরতি এবং কিছু স্কুলে নাতিদীর্ঘ ঘুমানোর সুযোগ আছে। অথচ এদেশে চাপ মুক্ত নয়; বরং আরো চাপ যুক্ত হয় যখন স্কুলের পর পর কোচিং, প্রাইভেট, স্যারের বাসায় দৌড়াতে হয়। এদেশে অনেক ছাত্রছাত্রীদের দুপুরের খাবার যখন রিকশা, সিএনজি বা গাড়িতে সারতে হয় তখন ইতালি, ফান্স ও মেক্সিকোতে স্কুলের সময় নির্ধারণ করা হয় পরিবারের সাথে লাঞ্চ করার সুযোগ দিয়ে। বেলজিয়ামে ১০ বছর পর্যন্ত যেখানে হোম ওয়ার্ক দেয়ার সিস্টেম নেই সেখানে হোমওয়ার্কের চাপে আমাদের শিশুদের খেলাধুলা এমনকি ঘুমও হারাম হয়ে যায়। একাডেমিক শিক্ষার চাপ লাঘবে সহ-পাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমকে গুরুত্ব দিয়েও সিঙ্গাপুর কিভাবে বিশ্বের অন্যতম সেরা শিক্ষা ব্যবস্হার অধিকারী হয়; তা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার নীতি-নির্ধারকরা কি একবার ভেবেছেন? স্কুলজীবনের শুরু হতে কেমন জীবন যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় আমাদের শিশুরা তা আমরা জানি। এখানে গোল্ডেন এ প্লাস না পেলে সব শেষ বলে, এ-কে দিয়ে কিচ্ছু হবে না বলে আমাদের বাবা-মায়েরা ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে অদ্ভুত এক উটের পিঠে চড়িয়ে বসেছেন। এইসব অনর্থক যুদ্ধ তাদের স্বপ্ন দেখায় না, এই যুদ্ধ তাদের সৃষ্টিশীল করছে না, এই যুদ্ধ তাদের যোগ্য নেতৃত্ব হিসেবে গড়ে তুলছে না, এই যুদ্ধ তাদের আইস্টাইন, নিউটন, রবীন্দ্রনাথ কিংবা নজরুলের সৃষ্টি করছে না। এই যুদ্ধ তৈরি করছে একটি হতাশ ও ক্লান্ত প্রজন্ম; যে প্রজন্ম প্রকৃত বিদ্যা হতে বাধ্য হয় দূরে সরে যাচ্ছে! শিশুদের শৈশবের সময় নষ্ট করে কিছু হবে না। আমাদের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা বাচ্চাদের শৈশব চুরি করছে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা তাহলে কেমন হওয়া উচিত? আবারো রবীন্দ্রনাথকে মনে পড়লো। তিনি লিখেছেন, “শিশুবয়সে নির্জীব শিক্ষার মতো ভয়ংকর ভার আর কিছুই নাই; তাহা মনকে যতটা দেয় তাহার চেয়ে পিষিয়া বাহির করে অনেক বেশি”(পথের সঞ্চয়/শিক্ষাবিধি)। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথমেই পুস্তকসাধারণকে ‘পাঠ্যপুস্তক এবং অপাঠ্যপুস্তক’ — এই দু'ভাগে ভাগ করেছেন। টেক্সট বুক কমিটি নির্বাচিত গ্রন্থগুলোকে তিনি অপাঠ্যপুস্তকের মধ্যে ফেলেছেন। "কমিটি দ্বারা দেশের অনেক ভালো হইতে পারে; তেলের কল, সুরকির কল, রাজনীতি এবং বারোয়ারি পূজা কমিটির দ্বারা চালিত হইতে দেখা গিয়াছে, কিন্তু এ পর্যন্ত এ দেশে সাহিত্য সম্পর্কীয় কোনো কাজ কমিটির দ্বারা সুসম্পন্ন হইতে দেখা যায় নাই।" মানে হলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দৃঢ় প্রত্যয় কমিটি বিশেষ কিছু বই পাঠ্য তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করে থাকে, যা শিক্ষার্থীর বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত নয়। তিনি মনে করেন, “কমিটি নির্বাচিত পাঠের মধ্যে শিশুকে নিবদ্ধ রাখিলে তাহাদের মন যথেষ্ট পরিমাণে বাড়িতে পারে না। অত্যাবশ্যক শিক্ষার সহিত স্বাধীন পাঠ না মিশাইলে ছেলে ভালো করিয়া মানুষ হইতে পারে না”। তিনি বেশ স্পষ্ট করেই বলেছেন,“আমরা যতই বিএ, এমএ পাস করিতেছি, রাশি রাশি বই গিলিতেছি, বুদ্ধিবৃত্তিটা তেমন বেশ বলিষ্ঠ এবং পরিপক্ক হইতেছে না।...সেইজন্য আমরা অত্যুক্তি আড়ম্বর এবং আস্ফালনের দ্বারা আমাদের মানসিক দৈন্য ঢাকিবার চেষ্টা করি”। কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, “বাল্যকাল হইতে আমাদের শিক্ষার সহিত আনন্দ নাই।...হাওয়া খাইলে পেট ভরে না, আহার করিলে পেট ভরে, আহারটি রীতিমত হজম করিবার জন্য হাওয়া খাওয়ার দরকার”। মুখস্থ বিদ্যাকে তিনি একপ্রকার নকল করাই ভেবেছেন। এ প্রসঙ্গে তাঁর অভিমত: “শিশুকাল হইতেই কেবল স্মরণশক্তির উপর সমস্ত ভর না দিয়া সঙ্গে সঙ্গে যথাপরিমাণে চিন্তাশক্তি ও কল্পনাশক্তির স্বাধীন পরিচালনার অবসর দিতে হইবে”। এবার স্কুল সম্পর্কে কবিগুরুর ভাবনা কী ছিলো তা লক্ষ করি। তাঁর ভাষায়, “ইস্কুল বলিতে আমরা যাহা বুঝি সে একটা শিক্ষা দিবার কল। মাস্টার এই কারখানার একটা অংশ। সাড়ে দশটার সময় ঘণ্টা বাজাইয়া কারখানা খোলে। কল চলিতে আরম্ভ হয়, মাস্টারেরও মুখ চলিতে থাকে। চারটের সময় কারখানা বন্ধ হয়, মাস্টার-কলও তখন মুখ বন্ধ করেন, ছাত্ররা দুই-চার পাত কলে-ছাঁটা বিদ্যা লইয়া বাড়ি ফেরে। তারপর পরীক্ষার সময় এই বিদ্যার যাচাই হইয়া তাহার উপরে মার্কা পড়িয়া যায়”। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দ্যেশে বলেছেন: কেবল গ্রন্থগত বিদ্যা নয়, প্রাকৃতিক জ্ঞানভাণ্ডার থেকে নানান উপকরণ আহরণ করে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে হবে। “চিত্ত যখন সমস্ত উপকরণকে জয় করিয়া অবশেষে আপনাকেই লাভ করে তখনই সে অমৃত লাভ করে।...নানা তথ্য, নানা বিদ্যার দিয়া পূর্ণতররূপে নিজেকে উপলব্ধি করিতে হইবে।...পরিণত জ্ঞানে জ্ঞানী হইতে হইবে”। বিশ্বকবি বিধাতার কাছে কামনা করেছেন এভাবে, “আমাদের ছাত্রগণ যেন শুধুমাত্র বিদ্যা নহে, তাহারা যেন শ্রদ্ধা, যেন নিষ্ঠা, যেন শক্তি লাভ করে— তাহারা যেন অভয় প্রাপ্ত হয়, দ্বিধাবর্জিত হইয়া তাহারা যেন নিজেকে নিজে লাভ করিতে পারে”। তবে হ্যাঁ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথার কিছু কিছু বিষয়ের প্রায়োগিকতা নিয়ে এ সময়ের প্রেক্ষাপটে হয়তো কথা থাকতে পারে। তবে তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য যা বলেছেন, তা একেবারেই যথার্থ। কবি সুনির্মল বসু বলেছেন: “বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র / নতুন ভাবের নানান জিনিস শিখছি দিবারাত্র”। ঠিক এবিষয়টিকেই কবিগুরু তাঁর মতো বলেছেন। পঞ্চ ইন্দ্রিয় দ্বারা জ্ঞানার্জনকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। শিক্ষাব্যবস্থার নীতি-নির্ধারকদের কাছে অনুরোধ, এতো কিছু না হোক, তবে আমাদের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের শৈশব যেনো ক্লাস, পরীক্ষা, কোচিং এ আটকা না পড়ে থাকে, কিছু একটা ভাবুন প্লিজ। শুরু করেছিলাম কবিগুরুর কথা দিয়ে, তাই শেষটাও করছি তাঁর বাণী দিয়ে। তিনি আফসোস করে বলেছেন, “তুচ্ছ বিষয়টুকুর জন্যও বই নহিলে মন আশ্রয় পায় না। বইয়ের ভিতর দিয়া জানাকেই আমরা পাণ্ডিত্য বলিয়া গর্ব করি। জগৎকে আমরা মন দিয়া ছুঁই না বই দিয়া ছুঁই”।শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন হয় প্রতি বছর। নতুন বছরের প্রথম মাসের শেষ সপ্তাহের শনিবার সাধারণত ভোট গ্রহণ করা হয়। এতটা সুন্দর ভাবে গণতন্ত্রের চর্চা অন্য কোন সমিতিতে দেখা যায় না যা দেখা যায় আইনজীবী সমিতিগুলোতে। সে মোতাবেক শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির ২০১৭ সালের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল জানুয়ারীর শেষ সপ্তাহে। ভোটার তালিকা নিয়ে একটু জটিলতার কারনে নির্বাচন পিছিয়ে যায় দুই দফা। শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের বছরের শেষ মিটিংয়ে আলোচনার ভিত্তিতে একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং তাকে সহযোগীতার জন্য দুইজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ নিয়ে আলাপ আলোচনা হলো। যথারীতি একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার সহ তিন জন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগও করা হলো। কয়েকজন সিনিয়র আইনজীবী ভোটার তালিকা নিয়ে অভিযোগ তোলায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন স্থগিত করে পদত্যাগ করে বসলেন। শুরু হলো জটিলতা। সাধারণ সভা করে ভোটার তালিকা নিয়ে একটা সমাধানে গিয়ে পূর্বের প্রধান নির্বাচন কমিশনার সহ তিন কমিশনারকে আবার দায়িত্ব দেয়া হলো নির্বাচন করার জন্য। তফসিল অপরিবর্তিত রেখে নির্বাচনের প্রস্তুতিকালে আবারও ভোটার তালিকা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলো। আবারও পদত্যাগ করে বসলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। এবার দীর্ঘ আলাপ আলোচনা শেষে সিনিয়র কয়েকজন আইনজীবী সমস্যার সমাধান করলেন। এবার আর সেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার নয়। নতুন করে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেয়া হলো। এবার নির্বাচন কমিশনার বেশ কলিজাওয়ালা। তৃতীয় দফায় নির্বাচন কলিজা ওয়ালা প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ফলে নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়। নির্বাচনে আমিও দাড়িয়ে ছিলাম কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য পদে। প্রত্যাশার চাইতে বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচনে পাস করলাম। চতুর্থ বারের মতে আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদে স্থান পেলাম। নির্বাচনে বন্ধুদের মধ্যে আরো পাস করল এডভোকেট জামাল ভূইয়া, এডভোকেট মোঃ আমিনুল ইসলাম পলাশ, এডভোকেট সরদার আজিজুল রহমান রোকন। নির্বাচন শেষ, একটু রিক্রিয়েশন দরকার! যেই ভাবা সেই কাজ। ঘুরতে যাওয়া দরকার, তাই টিম গঠনের পালাা। একে একে টিমে যোগ হলো জামাল ভূইয়া, পলাশ, রোকন, তারা, মুরাদ, জাকির ভাই, রুহুল ভাই, জাহাঙ্গীর ভাই, এমদাদ ভাই। দশ জনের টিম, এগার জন হলে মাঠে নেমে পড়া যেত! রুহুল ভাইর কাধে পড়লো ট্যুর ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব। শরীয়তপুরে না পেয়ে মাদারীপুর থেকে একটা বড় এসি মাইক্রোবাস ভাড়া করা হলো। গুছিয়ে একদিন সকালে রওয়ানা দিলাম কক্সবাজারের পথে। মধু হই হই গাইতে গাইতে আমরা পৌছে গেলাম কক্সবাজার। সারা রাস্তায় আনন্দ আর আনন্দ। যখন মন চাইছে চা খেতে, দাড়িয়ে গেলাম গাড়ি নিয়ে। যখনই খুধা লেগেছে খুজে নিলাম হোটেল। এভাবেই চললো আমাদের যাত্রা। সময়ের কোন বালাই নেই। সময়টাকে থামিয়ে দিয়ে ইচ্ছা মত মজা করা আরকি। রুহুল ভাই আগেই হোটেল বুকিং দিয়ে রেখেছিলো। ডলফিন মোড়েরর কাছেই হোটেল বেষ্ট ওয়েষ্টার্ণ প্লাস হেরিটেজে উঠলাম আমরা। হোটেলে উঠে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পড়লাম খাবারের সন্ধানে। খাওয়া দাওয়া শেষে বীচের কাছে গিয়ে দোকন থেকে কিছু প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সেরে আবার হোটেল। শান্তির ঘুম চুমু দিলো সবার চোখে। সকালে ঘুম থেকে উঠে বীচে নেমে গোসল সেরে আবার হোটেলের সুইমিং পুলে চই ডুব খেলা! বেশ কাটছে আমাদের কক্সবাজার ভ্রমণ। বিভিন্ন স্পট দেখার যে পরিকল্পনা করেছি তার মধ্যে রামু বৌদ্ধ বিহার অন্যতম তালিকায় রইল। এক দুপুরে আমরা গেলাম রামু বৌদ্ধ বিহার। বিশাল প্রাসাদপম বৌদ্ধ মন্দিরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করার সাথে সাথে একজন দৌরে এসে বললো, জুতা খুলে প্রবেশ করুন। আমরা জুতা খুলে এক পাশে রেখে ভিতরে প্রবেশ করলাম। ভিতরে বিশালাকায় বৌদ্ধ মূর্তি নিরবে বসে আসে। ঘুরে ঘুরে সরকারের অর্থানুকুল্যে নির্মিত নতুন কমপ্লেক্স দেখছি। দ্বিতীয় তলায় বিশাল হল রুমের ভিতর ছোট ছোট ছেলেরা মাথা ন্যাড়া অবস্থায় বসে বসে দুষ্টামি করছে। এ বয়সটাই দুষ্টামির! কিন্তু ধর্মীয় বিধি নিষেধের কারনে তাদের আটকে রেখেছে মনে হলো। রুমের দেয়াল ঘেষা বোর্ডে বিভিন্ন ছবি। আছে সেলফে সাজানো বইয়ের সমারহো। একটা বই দেখে আমার আর তারার নজর কারলো। বইটির নাম চুল্লবর্গ। একজন ভিক্ষুকে ডাক দিলাম। কাছে আসতেই জানতে চাইলাম বইগুলো কি বিক্রর জন্য। আমাদের সে জানালো হ্যা, এগুলো বিক্রির জন্য। দাম জানতে চাইলে বললো এর মূল্য দুইশত পঞ্চাশ টাকা। আমি আর তারা দুজনে দুটি বই নিলাম। বইয়ের মূল্য বাবদ পাঁচশত টাকার একটি কচকচে নোট ভদ্রলোককে ধরিয়ে দিলাম। এর পর ওখান থেকে নেমে আমরা বাইরে আসলে আরেক ব্যক্তি আমাদের পাশের কিছু পুরাতন বৌদ্ধ নিদর্শন দেখানোর জন্য নিয়ে গেল। আমন্ত্রনের ভাব দেখে মনে হলো খুবই আন্তরিক। আমাদের বললো, এত দুর থেকে এসেছেন, আদী নিদর্শনগুলো দেখে যাবেন না? লোকটি আমাদের ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বৌদ্ধের বিভিন্ন পুরাতন মুর্তি দেখালো। কোনটা কত সালের তা বলে দিচ্ছে আর একটা দেখা শেষ হলে আরেকটার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এভাবে দেখতে দেখতে যখন সব দেখা শেষ তখন আন্তরিক ব্যক্তিটির আসল রুপ বেরিয়ে পড়লো। সে এবার আমাদের কাছে বখশিস দাবী করলো। তার চাইতে লজ্জা না করলেও আমাদের লজ্জা লাগলো। আমরা তাকে বখশিস দিয়ে বের হয়ে এলাম। গেটের পাশেই আমাদের মাইক্রোবাস দাড়ানো ছিলো। স্বজতেœ বইটাকে নিয়ে আমরা গাড়িতে উঠে গেলাম। গাড়িতে উঠে বইটা নেড়ে চেরে দেখলাম, লেখা সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে বিতরনের জন্য। লেখাটা দেখে একটু অবাক লাগলো! যে বইটি বিনা মূল্যে বিক্রয়ের জন্য সেই বইটির দাম আড়াইশো টাকা কি করে হয়? বুদ্ধিষ্ট ব্যক্তিটি আমাদের বলতে পারতো, বইটি বিনা মূল্যে বিতরনের জন্য, আপনারা খুশি হয়ে মন্দিরের জন্য যদি কিছু দান করতে চান তবে করতে পারেন। আমরা দুটি বই হাতে নিয়ে ধরেই নিয়েছি এর মূল্য পাঁচশত টাকার কম হওয়ার কথা নয়। আমাদের সত্যি কথাটা বললে অনায়াসেই দুটি বই নিয়ে এক হাজার টাকা তার হাতে তুলে দিতাম। আমাদের কাছে ঐ ব্যক্তিটিকে প্রতারক বলেই মনে হলো! এবার আমাদের যাত্রা রামুর একশ ফুট লাম্বা বৌদ্ধ মূর্তি প্রদর্শন। একশ ফুট লম্বা মূর্তি সম্পর্কে কিছু কথা নেট থেকে খুজে পেয়েছি। বন্ধুদের জন্য তা তুলে ধরা হলো- মহামানব গৌতম বুদ্ধ ধন্যবতীর রাজা চাঁদ সুরিয়ার সময় সেবক আনন্দকে নিয়ে আরাকানের রাজধানী ধন্যবতী আসেন। সেখানে এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সেবক আনন্দকে উদ্দেশ্য করে বুদ্ধ বলেন, ‘হে আনন্দ ভবিষ্যতে পশ্চিম সমুদ্রের পূর্ব পার্শ্বে পাহাড়ের উপর আমার বক্ষাস্থি স্থাপিত হইবে। তখন উহার নাম হইবে ‘রাংউ’। ধন্যবতী রাজবংশ গ্রন্থে এর উল্লেখ পাওয়া যায়। ধারণা করা হয়, ভাষাতাত্ত্বিক প্রকৃয়ায় রাংউ থেকে রামু শব্দটি এসেছে। রাংউ বার্মিজ শব্দ। রাং অর্থ বক্ষ, উ অর্থ অস্থি অর্থাৎ রাংউ শব্দের অর্থ হচ্ছে বক্ষাস্থি। বর্তমানেও রামুতে রয়েছে অনেকগুলো প্রাচীন বৌদ্ধ ঐতিহ্য ও প্রতœতাত্তিক নিদর্শন। এই রামুতে বৌদ্ধ সভ্যতা বা বৌদ্ধ স্থাপত্যের গোড়াপত্তন কখন থেকে তা সঠিকভাবে বলা মুশকিল। তবে আরাকানের প্রাচীন ইতিহাস ‘রাজোয়াং’ থেকে জানা যায়, ‘খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতকের দিকে অর্থাৎ ১৪৬ খ্রিস্টাব্দে মগধ রাজ্যের চন্দ্র সূর্য নামক জনৈক সামন্ত যুবক তাঁর বহু অনুগামী সৈন্যসামন্ত নিয়ে চট্টগ্রাম ও আরাকান দখল করেন। একটি অখন্ড রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন এবং আরকানের ধন্যবতীতে রাজধানী স্থাপন করেন। রাজা চন্দ্র সূর্য এবং তাঁর সঙ্গে আগত সৈন্যদের অধিকাংশ ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। তারা চট্টগ্রাম ও আরকানে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারে কার্যকর ভূমিকা রাখেন। তাই মগদাগত বৌদ্ধ এবং এতদঅঞ্চলের বৌদ্ধদের মধ্যে নিবিড় ধর্মীয় সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ফলে রাজকীয় প্রষ্ঠপোষকতায় চট্টগ্রাম ও আরকানে বৌদ্ধ ধর্মের দ্রুত বিস্তার ঘটে’। বিভিন্ন সূত্রে আরো জানাযায়, প্রাচীনকাল থেকে রামু আরাকানী এবং এদেশীয় রাখাইন (রাকখাইন) বৌদ্ধদের পদভারে মুখর ছিল। আরাকানী শাসনামলে কক্সবাজার বা রামুতে রাখাইন সম্প্রদায় ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ। ইংরেজদের আগমনের আগ পর্যন্ত এই সংখ্যাধিক্য অটুট ছিল। বর্তমানে রামুতে যে সকল বৌদ্ধ পূরাকীর্তি বা প্রাচীন বৌদ্ধ স্থাপত্য শিল্প রয়েছে, বিশেষ করে দৃষ্টিনন্দন শিল্পঐশ্বর্যে কাঠের তৈরি বিহারগুলো রাখাইনদের স্বর্ণোজ্জ্বল যুগের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। তবে এসব পূরাকীর্তির মধ্যে কোনটি সবচেয়ে প্রাচীন? সঠিক দিনক্ষন এভাবে নিরুপন করা যায়নি। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে (খ্রিস্টপূর্ব ৩০৮) রামকোটের পাহাড়ের উপর স€্রাট অশোক রামকোট (রাংকুট) বনাশ্রম বৌদ্ধবিহারটি নির্মাণ করেন। এই বিহারের সংরক্ষিত বুড়া গোঁসাই মূর্তির মাঝেই গৌতম বুদ্ধের বক্ষাস্থি স্থাপিত হয়েছে। চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ এর ভ্রমণকাহিনীতে উল্লেখ আছে, বিহার নির্মাণের পরর্বতী সময়ে সেখানে সাত’শ ভিক্ষু বসবাস করতেন। কালের পরিক্রমায় অনেক ঐতিহ্য হারিয়ে গেছে। কিছু কিছু হারিয়ে যাওয়ার পথে। ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সাম্প্রদায়িক হামলায় এরকম বেশ কয়েকটি প্রাচীন পুরাকীর্তি ধ্বংস করা হয়েছে। মুছে ফেলা হয়েছে ইতিহাসের পাতা থেকে। তবে পুরাকীর্তি ও প্রতœতাত্তিক নিদর্শনের ঐতিহ্য বহন করে এখনো স্বগৌরবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, এমন নিদর্শনের সংখ্যা রামুতে এখনো কম নয়। শ্রীকুল গ্রামে কাঠের তৈরি শ্রীকুল রাখাইন বৌদ্ধ বিহার। এটি নির্মাণ করা হয়েছে ১৮৯৯ সালে। ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের লামার পাড়া গ্রামে অবস্থিত থোয়াইংগ্যা চৌধুরীর ক্যাং। তবে গ্রামের নামানুসারে এটি লামারপাড়া ক্যাং নামেই পরিচিত। ১৮০০ সালে তৎকালীন রাখাইন জমিদার উথোয়েন অংক্য রাখাইন এটি প্রতিষ্ঠা করেন। পাড়ার ভেতরের শান্ত নিথর কিছুটা পথ মাড়িয়ে এ ক্যাং-এ পৌঁছালে এখনো চোখে পড়ে, আশ্চর্য হবার মতো বড় বড় দুটি পিতলের ঘন্টা। পিতলের তৈরি এগুলো দেশের সবচেয়ে বড় ঘন্টা। এখানে আরও সংরক্ষিত আছে অষ্টধাতু নির্মিত দেশের সবচেয়ে বড় বুদ্ধমূর্তি এবং প্রাচীন শিলালিপিসহ ঐতিহাসিক স্মৃতি চিহ্ন। রেংগুনী কারুকাজে তৈরি প্রায় দুইশ বছরের প্রাচীন এ বিহারের নির্মাণ শৈলীও দারুন চমৎকার। কিন্তু উপযুক্ত পরিচর্যা এবং রক্ষণা-বেক্ষণের অভাবে বর্তমানে এ বিহারটির ভগ্নদশা। ১৮৯৯ সালে তৈরি চেরাংঘাটা উসাইসেন বৌদ্ধ বিহার। স্থানীয়ভাবে বড় ক্যাং নামে পরিচিত। এ বিহারের নির্মাণ শৈলীও দারুন। রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে কাঠের তৈরি বিহারগুলোর মধ্যে প্রায় দেড়’শ বছরের পুরনো হাজারীকুল রাখাইন বৌদ্ধ বিহার ও দক্ষিণ শ্রীকুল গ্রামে অবস্থিত লাহ-পেঁ-বাঙ-রঙ ক্যাং বা সাংগ্রীমা ক্যাং বর্তমানে ধ্বংস স্তুপে পরিণত হয়েছে। রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়কের পাশ ঘেঁষে পাহাড় চূড়ায় দাঁড়িয়ে আছে বিশালাকার জাদী। এটি লাওয়ে জাদি নামে পরিচিত। এক সময় ওই জাদির সীমানা প্রাচীরের উপর দাঁড়ালে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত দেখা যেত। এখন পাহাড় ধ্বসের কারণে সেই সীমানা প্রাচীরও ভেঙ্গে গেছে। রামুর পোড়া মাটিতে আধুনিক স্থাপত্য শিল্পঃ ইতিহাস প্রসিদ্ধ রামুতে ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেবর কাল রাতে ঘটে গেছে এক অবিশ্বাস্য ধ্বংসযজ্ঞ। যে ধ্বংসযজ্ঞে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে রামুর প্রাচীন ইতিহাসের সাক্ষী এরকম বারটি নিদর্শন। পুড়ে গেছে মহামূল্যবান বুদ্ধের ধাতু, তাল পাতার উপর বিভিন্ন ভাষায় লেখা ত্রিপিটক, অনেকগুলো বুদ্ধমূর্তিসহ প্রাচীন প্রতœতাত্তিক নিদর্শন। পাশাপাশি ওই একরাতেই পুড়েছে এখানকার হাজার বছরের গর্বের ধন-সম্প্রীতি। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টায় মাত্র এক বছরে বদলে গেছে রামুর দৃশ্যপট। সেই ধ্বংসস্তুপের উপর গড়ে তোলা হয় দৃষ্টিনন্দন বৌদ্ধ বিহার। আধুনিক স্থাপত্য শৈলীতে তৈরি নব নির্মিত সেই বিহারগুলোই এখন নতুন ইতিহাস। একদিন এ ইতিহাসের বয়সও হবে হাজার বছর। রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহার, উত্তর মিঠাছড়ি বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র, রামু মৈত্রী বিহার, লাল চিং, সাদা চিং, অপর্ণাচরণ চিং, জাদী পাড়া আর্য্যবংশ বৌদ্ধ বিহার, উখিয়াঘোনা জেতবন বৌদ্ধ বিহার, উত্তর মিঠাছড়ি প্রজ্ঞামিত্র বন বিহার, চাকমারকুল অজান্তা বৌদ্ধ বিহারসহ নব নির্মিত এসব বৌদ্ধ বিহার যেন এখন নতুন ইতিহাস। এসব বিহারের ঐতিহ্য নিয়ে আবার নতুন করে সমৃদ্ধ এই রামু। অন্য রকম আলোয় আলোকিত বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রঃ উঁচু নিচু পাহাড় টিলায় সবুজের সমারোহ। এ সবুজের মাঝে গড়ে ওঠেছে মানুষের বসতি। শান্ত কোমল পরিবেশে এখানকার প্রাকৃতিক সৌর্ন্দর্য মানুষকে অবিরাম কাছে টানার মত জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের উত্তর মিঠাছড়ি গ্রাম। সেই অসাধারণ সৌন্দর্য্যে ঘেরা পাহাড় চূড়ায় এক টুকরো সবুজের মাঝে ছিল বাঁশের তৈরি বিমুক্তি বির্দশন ভাবনা কেন্দ্র। এর সামনেই ছিল উত্তর-দক্ষিণ কাত হয়ে শোয়া গৌতম বুদ্ধ মূর্তি। সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বিহারটি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মূর্তিটি প্রায় অক্ষত থেকে যায়। অন্যান্য বিহারগুলোর মত এটিও নতুনভাবে নির্মাণ করে সেনাবাহিনী। তবে সেনাবাহিনী বারটি বিহার নির্মাণ করলেও সবকিছু মিলিয়ে অসাধারণ রূপ পেয়েছে এ বিহারটি। বর্তমানে যে কেউ বিহারটি দেখে অভিভূত হবেনই। বিহারের চমৎকার নির্মাণ শৈলীতো আছেই এ ছাড়াও বিহারের আঙ্গিনাকেও সাজানো দারুনভাবে। সেই অসাধারণ সৌন্দর্যের মাঝে নতুনভাবে শোভা পাচ্ছে একশ ফুট দীর্ঘ বিশালাকার আগের সেই মূর্তিটি। বর্তমানে এটি যেন অধারণের চেয়েও বেশি অসাধারণ। বলা যায়, রামুর বৌদ্ধ ঐতিহ্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র। ‘অহিংসা, সাম্য ও মৈত্রীর বাণী নিয়ে বৌদ্ধ জাতিকে আলোর পথ দেখান মহামানব গৌতম বুদ্ধ। তিনি শান্তির প্রতীক, বৌদ্ধদের পথ প্রদর্শক। তাই এ মূর্তির নাম দেওয়া হয়েছে বিশ্বশান্তি সিংহশয্যা গৌতম বুদ্ধমূর্তি। বিহারকে নতুন করে সাজানোর পর এখন এ মূর্তিটিও নতুন রূপ পেয়েছে। পাহাড় চূড়ায় নির্মিত বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রের দৃষ্টিনন্দন স্থাপনার পাশাপাশি নতুন মাত্রা দিয়েছে এ মূর্তিটি। বর্তমানে এটিই দেশের সবচেয়ে বড় বুদ্ধমূর্তি। মিয়ানমারের ইয়াংগুন থেকে কারিগর এনে এটি তৈরি করা হয়। মিয়ানমারের কারিগর থোয়াইংছি রাখাইন দীর্ঘ সাড়ে তিনবছর কাজ করে মূর্তিটি তৈরি করেন। ‘এ মূর্তির মডেলও সংগ্রহ করা হয়েছে মিয়ানমারের ইয়াংগুনের ধাম্মাদূত বৌদ্ধ বিহার থেকে। ওই মন্দিরে সংরক্ষিত গৌতম বুদ্ধের মূর্তির আদলে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এ মূর্তির নির্মাণ শৈলী দেশী বিদেশী সকল মানুষকে আকৃষ্ট করছে যেমনটি আকৃষ্ট হয়েছি আমরা।হুমায়ুন আহমেদের গল্প পড়ে জেনেছি, মস্তিষ্কের ভেতরে অজানা রহস্যময় এক জগত আছে যা স্বাভাবিক চেতনা জাগ্রত থাকা অবস্থায় প্রকাশিত হয় না। যখন মানুষ অচেতন হয়ে পড়ে বা দেহের মৃত্যু ঘটে তখন মস্তিষ্ক তার স্ব রুপে আবির্ভুত হয়। তখন সে বিচিত্র অদ্ভুত সব ঘটনা দেখাতে থাকে। এ জন্যই কোমায় যাওয়া রোগীরা প্রায় পুরো সময় ধরেই নানা দুঃসপ্ন দেখে থাকে। গত দুদিন ধরে আমার সাথে এই রকম হালকা পাতলা কিছু ব্যাপার ঘটছে। ঘটনা হলো গিয়ে, সেদিন মশার জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে খুব করে এরোসল স্প্রে করে একেবারে ঘন কুয়াশা জমিয়ে ফেলেছিলাম। তারপর ক্লান্ত হয়ে জানালা বন্ধ রেখেই বদ্ধ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েছি। ফলস্বরুপ বিষ অনেকটা ইনহেল হয়ে গিয়েছে, কিছুটা মস্তিষ্কে প্রবেশ করে সেখানে নিউরনে প্রদাহ তৈরি করে থাকবে। বুকে ব্যাথা এবং হাল্কা মাথা ঘুরানো ভাব হচ্ছিল। মস্তিষ্কে অক্সিজেনের স্বল্পতা দেখা দিয়েছে হয়তো। এর পর থেকে যখনই ঘুমাচ্ছি তখনই সারাক্ষন বিচিত্র অতিবৈজ্ঞানিক এবং ভয়ংকর প্যারানরমাল সব স্বপ্ন দেখছি দুদিন ধরে। সেগুলো যদি লিখে ফেলা যেতো তাহলে চমৎকার কিছু সায়েন্স ফিকশন এবং ভৌতিক গল্প তৈরি হয়ে যেত। কিন্তু সমস্যা হলো ঘুম ভাঙ্গার পর স্বপ্নগুলা বেশিক্ষন মনে থাকছে না। অনেকে বলে থাকেন স্বপ্ন হচ্ছে ঘুমন্ত মস্তিষ্কের এলোমেলো চিন্তা। সাধারনত মানুষ ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে পৃথিবী থেকে যে ডাটা সংগ্রহ করে সে অনুযায়ী চিন্তা করতে পারে। যা আমরা দেখিনি কখনো সে সম্পর্কে আমাদের ধারনাই করতে পারি না। কিন্তু আমি দুদিনে স্বপ্নে যা দেখেছি তা কষ্মিনকালেও জাগ্রত মস্তিষ্কে চিন্তাও করতে পারতাম না, এ সম্পর্কিত কোনো ডাটাই আমার মাথায় কখনো ছিল না। সম্ভবত মানুষের মস্তিষ্কে মেমোরিতে সৃষ্টিকর্তা এমন কিছু ডাটা লোড দিয়ে রেখেছেন যা বেঁচে থাকতে একসেস করা সম্ভব না। সেগুলো হচ্ছে মৃত্যুর ওপারের অজানা জগতের গল্প। কেউ যখন মৃত্যুর খুব কাছাকাছি চলে যায় তখন ওপারের জগতের দৃশ্যগুলো আংশিক প্রকাশিত হয়। তখনই আমরা অদ্ভুত স্বপ্নগুলো দেখে থাকি। ব্যাপারটা বেশ ইন্টারেস্টিং লাগছে। ভাবছি স্বপ্নের মাধ্যমে গল্পের আইডিয়া পাওয়ার জন্য হলেও মাঝে মাঝে অল্প একটু এরোসোল বিষ জীবন সংশয় না হয় এমন নিরাপদ মাত্রায় পানির সাথে গুলিয়ে খেয়ে ফেললে মন্দ হয়না। মাঝে মাঝে ব্রেনের সেই রহস্যময় রোমাঞ্চকর গোপন জগতে ঘুরে আসা ভালোপ্রত্যেক দিন একই নিয়মে কাটতে থাকে জেমসের। প্রায় কয়েক মাস হয়ে গেল সে এই গ্রহে একা একা থাকে। নিজেকে সে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না মেশিনের মাঝে। তার শীতল চোখজোড়ার দিকে তাকিয়ে কেউ আর কথা বলতে এগিয়ে আসে না। ছোট্র কুটিরে তার বিশালাকার হাউন্ডটা নিয়ে থাকে সে। প্রতিদিনের মত ভোরের মাঝে ঘুম থেকে উঠে গেল জেমস। পাওয়ার চার্জ করে হাউন্ডটাকে নিয়ে বের হল রাস্তায়। ধবধবে সাদা লোমের বিশালাকার হাউন্ড সে। যখন তাকে জেমস বাসায় নিয়ে এসেছিল তখনো এত বড় ছিল না, কিছু দিনের মাঝে প্রকান্ড বড় শিকারীতে পরিণত হয়েছে সে। আশেপাশের লোক ভয়ে পথ ছেড়ে দিচ্ছে তাদের জন্যে। প্রতিদিনের মত বাজারের দিকে এগুচ্ছে জেমস। পুরোনো ইলেক্ট্রনিক অকেজো পার্টস বস্তায় ভরে কিনে সে। বাসায় এসে সেগুলো ঠিক করার চেষ্টা করে। বেশিরভাগই অকেজো হিটারের কয়েল সার্কিট পায় এর মাঝে। এর মাঝের যেগুলো ঠিক করতে পারে সেগুলো বিক্রি করে বাজারে, এভাবেই চলছে তার এখানকার জীবন। বাজারের দোকানদার তাকে দেখে একটা বস্তা তাকে ধরিয়ে দিল, বিনিময়ে সে কিছু ইউনিট তাকে দিয়ে বস্তাটা হাউন্ডটার উপর চাপালো। প্রচন্ড ঠান্ডা পরেছে আজকে। বেশিরভাগ মানুষই মোটা উলের ওভারকোট পরে রাস্তায় নেমেছে। ভাবনার সাথে সাথে তার ভেতরে হিটিং চিপগুলো কাজ করা শুরু করে দিল। বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই যে তার মাথার ভেতরের চিপটা কত ডেটা প্রসেস করে সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছে। বাসায় পৌছে দেখতে পেল কয়েকজন লোক দাঁড়িয়ে আছে সামনে। হাতে তাদের ব্লাস্টার। তার জন্যেই অপেক্ষা করছে। কি চাই? খসখসে গলায় প্রশ্ন করলো জেমস। এটাতেই তুমি থাকো? ভ্রু কুচকে তাকে প্রশ্ন করলো তাদের এক জন। হাউন্ডটার দিকে তাকিয়ে আছে। মাথা ঝাকালো সে। এখানে আর থাকতে পারবে না। ভ্রু কুচকালো জেমস। অপেক্ষা করছে। আমাদের এলাকাতে থাকতে হলে আমাদের ফি প্রদান করতে হয়, তুমি জোর করে থাকতে পারো না। এত মাস ধরে ফি না দিয়ে থাকছ এটা চলবে না। একপলক তাকালো তাদের দিকে, তোমরা অফিশিয়াল? অফিশিয়াল মানে? রেগে গেল তাদের একজন। আমরা আমরাই! টাকা চাইছি দিবি! নাইলে তোরে পিটিয়ে এলাকা থেকে বের করে দিবো! হাউন্ডটা আর সহ্য করলো না। প্রচন্ড স্বরে ঘেউ ঘেউ করে লোকটার হাত কামড়ে ধরল, তুষাঢ় সাদা মাটিতে টপটপ করে রক্ত পরতে থাকলো লোকটার। চিৎকার করে সরে গেল। ভয়ঙ্কর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে হাউন্ডটার দিকে। তোকে দেখে নেবো আমরা! আঙ্গুল তুলে শাশালো লোকটা। জবাবে আরেক পা বাড়ল হাউন্ডটা। উলটো দিকে দৌড়ে পালালো তারা। মুচকি হাসলো জেমস। এলাকার গুন্ডা বাহিনীর কেউ হবে। হাউন্ডটার ঘাড় চুলকে দিল সে। তার দিকে ঘেষে এল হাউন্ডটা, মিটমিট করছে তার লাল উজ্জ্বল চোখদুটো। সার্কিট জোড়া দিতে দিতে সন্ধ্যা প্রায় হতে চললো। সময় যে এত তাড়াতাড়ি চলে গেল টেরও পেল না। অবশ্য তার মাথায় বসানো চিপটা সাথে সাথে চোখের সামনে লেখা প্রকাশ করলো, ৬ ঘণ্টা ৩২ মিনিট ধরে টানা কাজ করে গেছে। যেসব যন্ত্র ঠিক করতে পেরেছে সেগুলো একটা প্যাকেটে ভরে আলাদা করে উঠল জেমস। হাউন্ডটাকে বাসায় রেখে বরফে স্তুপ হওয়া জঙ্গলে চলে আসলো। হীমাংকের অনেক নিচে আজকের তাপমাত্রা। ছুড়ির মত বাতাস তার শরীরে বিধছে। সাধারণ মানুষ হলে শুধুমাত্র একটা জ্যাকেট পরে বেড় হবার কথা চিন্তাও করতে পারতো না। কিন্তু সে সাধারণ মানুষ নয়! কতক্ষণ বনের মাঝে একা একা হাটছিল বলতে পারবে না। হঠাৎ খশখশ শব্দ শুনে আশেপাশে তাকালো। তার সেন্সরগুলো কাউকে ডিটেক্ট করতে পারলো না। ভারী অদ্ভূত! অবাক হল সে। তার চোখে বসানো সেন্সর অনেক আগে থেকেই মানুষ বা আশেপাশের কিছু ডিটেক্ট করতে পারে। আবারো শব্দটা শুনতে পেল, আরো জোরে। এগুতে থাকল জেমস, যেন জানে সে কোথায় যেতে হবে। তার পায়ের সংস্পর্শে পাতলা তুষাড় উড়তে লাগল। শব্দটা আরো জোরে শোনা যাচ্ছে, মৃদু খসখসে শব্দ, কেউ যেন ভারি কিছু টেনে নিয়ে যাচ্ছে বরফের মাঝে দিয়ে। দূরে অন্ধকারে একটা মানুষের মত অবয়ব দেখতে পেল সে। পেছন ফিরে দাঁড়িয়ে আছে। উচ্চ আলোক সংবেদিত সেন্সর কিছুই দেখতে পাচ্ছে না। শুধু সাধারণ মানুষের চোখে সে দেখতে পেল একটা অবয়ব। আস্তে আস্তে কাছে আসছে সে। ধীরে ধীরে ঘুরে দাড়ালো লোকটা। তার থেকেও অনেক উচু হবে। ধবধবে সাদা একটা স্যুট তার পরনে। সাদা একটা হেড-ক্যাপ মাথায় দেয়া তার। তুষাড়ের সাদা অবয়বের মাঝে তাকে অপার্থিব লাগছে। কে তুমি? খসখসে গলায় প্রশ্ন করলো জেমস। হালকা তার দিকে তাকালো লোকটা। ধুসর চোখদুটো যেন তার ভেতর পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছে। নিষ্ঠুর আবেগহীন দুটো চোখ। ঠিকই খুজে পেয়েছো আমাকে তাহলে। অপেক্ষা করল জেমস। তার মাথায় বসানো স্কেনারগুলো লোকটার কোন অস্তিত্বই পাচ্ছে না। আশেপাশে আড়াই মাইলের মাঝে কেউ নেই। আমাকে খুজে পাবে না, বিদ্রুপ শোনা গেল লোকটার মুখে। আমি জানি তুমি কে… তুমি তাহলে রড্রিক্সের লোক? জেমসের গলা আরো চড়া হল। রড্রিক্স? মৃদু হাসল লোকটা। আমি তোমাকে নিশ্চিত করছি আমি প্রজেক্ট’১২ এর কেউ নই। কোন বায়োবট প্রকল্পের সাথেও আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। তারপরও তুমি জানো আমি কে! তিক্ততা প্রকাশ পেল জেমসের কণ্ঠে। আমি সবকিছু জানি। দুপাশে হাতগুলো হালকা বাড়ালো লোকটা। সব কিছু, কেউ কোন কিছু লুকাতে পারে না আমার কাছ থেকে। আমার কাছে কি চাই? আরো চড়ল জেমসের গলা। কিছু না! হাল্কা স্বরে বলল লোকটা। তার সাদা স্যুটের প্রান্ত বাতাসে হালকা উড়ছে। আমি তোমাকে পথ দেখাতে এসেছি। মাথার ভেতর চাপা গুঞ্জনটা বাড়ছে জেমসের। বুঝতে পারছে নিয়ন্ত্রণ হারাতে চলছে প্রসেসর। আমাকে পথ দেখাতে হবে না, নিজের ভালো চাইলে আমার পেছনে আর কোনদিন আসবে না। ঘুরে দাড়ালো সে। সারা জীবন তাহলে এখানেই কাটিয়ে দিবে? অজানা এক গ্রহে? যেখানে তোমার মত হাজার হাজার মানুষকে বায়োবট বানানো হচ্ছে, তুমি চুপচাপ উপেক্ষা করে যাবে? মাথার ভেতর চাপটা বেড়েই চলেছে তার। মাথা ঝাড়া দিয়ে বলল তুমি বুঝবে না। আমি নিজেকেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না… ভালো কিছু করার চেয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষতিই বেশি হবে। মানুষের আমাকে দরকার নেই! তোমার বোনেরও কি তোমার দরকার নেই? শাই করে ঘুরে দাড়ালো জেমস। চোখদুটো টকটকে লাল হয়ে গেছে তার। ব্রেইনের সার্কিটগুলো ওভারফ্লো করছে বুঝতে পারছে সে। খবরদার! আমার বোনের কথা তুলবে না! নিস্তব্ধ বনের মাঝে বহুদূরে ছড়িয়ে গেল তার কণ্ঠ। কিন্তু তার যে তোমাকে ভীষণ দরকার! তার শত্রুরা তাকে মারতে যাচ্ছে, কয়েকবার বেচে গেছে, আর কতবার বাচবে? তাকে সাহায্য করবে না তুমি? আমি চাইনা জেনা আমার এই চেহাড়া দেখুক! খিপ্ত ভঙ্গিতে জবাব দিল জেমস। আমি তার ভালোর চেয়ে ক্ষতিই বেশি করবো… তাহলে সে মারা গেলে, তার জন্যে দায়ী থাকবে তুমি! সাধারণ গলায় বলে চলল লোকটা। চুপ করো! প্রচন্ড বেগে হাত চালালো সে, কিন্তু কিছুই মিলল না। তাকিয়ে দেখলো কেউ নেই আশেপাশে, নির্জন বনের মাঝে দূরে কোথাও একটানা নাম না জানা পাখি ডেকে চলছে। কোথাও কেউ নেই। লোকটা হাওয়া হয়ে গেছে। ***** বাড়ির পথ ধরেছে জেমস। মাথার ভারভারটা কমে যাচ্ছে। আস্তে আস্তে মস্তিষ্কে বসানো চিপটা সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে ঠিকভাবে। চোখের রঙও স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। ম্যালফাংশন্ড অপারেটিং সিস্টেম তার মাঝে প্রবেশ করানো হয়েছে, তাই উত্তেজিত মুহূর্তে তার উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে না মাইক্রো চিপগুলো। অবশ্য পুরোপুরি ঠিক সিস্টেম ইন্সটল করলে নিজের উপর কোন নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারতো না জেমস। উন্মাদ ডক্টরের উপর প্রচন্ড রাগ অনুভব করলো সে। রড্রিক্স! হাত মুঠো হয়ে গেল তার। জেনার কথা মনে পরল তার। তার ছোট্র বোন জেনা! স্পেস রেঞ্জারের চাকরী নেবার পর কত কাদত জেনা! কয়েক মাস পর পর ভাইকে দেখতে পাবে ভাবলেই তার চোখ দিয়ে পানি পড়ত! জেমসেরও অনেক খারাপ লাগত তাকে ছেড়ে থাকতে। এখন মনে হয় সেগুলো যেন অন্য কোন মানুষের কাহিনী, সেতো আর আগের জেমস নেই! বাসার সামনে আসতেই অস্বাভাবিক কিছু আচ করতে পারল জেমস। কোথাও কোন গন্ডগোল হয়েছে। দৌড়ে বাসায় ঢুকল সে। ছোট্র সে কুটির তার। সবকিছুই ঠিকমত আছে। কিন্তু তার হাউন্ডটা পরে আছে মেঝেতে। পুরো মেঝেতে রক্তের ছোপছোপ দাগ ছড়িয়ে আছে। হাউন্ডটার সাদা লোম রক্তে লাল হয়ে আছে। ঘাড়ের পাশে তাজা ব্লাস্টারের ক্ষতচিহ্ন… নিজের উপর আর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারলো না জেমস, মাইক্রোচিপগুলো ওভারফ্লো করলো, তার চোখ টকটকে লাল হয়ে গেল। দরজা খুলেই বেরিয়ে এল সে ঘরটা থেকে। দৃঢ় পায়ে ছুটে চলল জঞ্জালে ঘেরা ছোট আইলে, তাকে বাধা দিতে চাইলো কেউ একজন, শুধু হাতটা নড়ালো জেমস আর ছিটকে পরে গেল সে, মুখ দিয়ে রক্তের ফোয়ারা ছুটছে। ব্লাস্টার নিয়ে এগিয়ে এল আরো কয়েকজন। কিন্তু একটা রশ্মিও বের হলো না, তার আগেই সবগুলো পরে গেল মেঝেতে, কাতরাতে থাকল ব্যাথায়। কোন পরোয়া করল না জেমস, একে একে সবগুলোকে যতক্ষণ পারলো পিটিয়ে চলল। যখন তার মাইক্রোচিপ গুলো নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলো তখন শান্ত হলো সে। কিন্তু ততক্ষণে আর কেউ বেচে রইল না। গ্যাংটার সব সদস্য মরে পরে থাকল মাটিতে। পেছনে ফিরে তাকালো জেমস। এখানে আর থাকা চলবে না। ফিরে যাবে সে। শান্তির চেয়ে শাস্তির পথই উত্তম ব্রিটিশরা এদেশ দুইশ বছর শাসন করেছে । তাদের থেকে আমরা অনেক কিছু পেয়েছি হোক সেটা স্বেচ্ছায় বা চাপিয়ে দেয়া । এখন, ভালো জিনিসটা না নিতে পারলেও খারাপটা ঠিকই নিয়েছি আবার নিয়েছি নিয়েছি তো সেটা আবার চিরস্থায়ীও করে ফেলেছি ! বাংলাদেশে সিভিল সার্ভিস হলো প্রশাসন এর ইংরেজি রূপ । সিভিল সার্ভিস নামটার ভিতরেই দেখা যায় সার্ভিস বা সেবা শব্দটি কিন্তু কাজের বেলায় সেটা কি ? জেলা প্রশাসক , উপজেলা প্রশাসন , এডমিনস্ট্রেশন , অমুক শাসন তমুক প্রশাসক এসব হলো দপ্তর গুলোর নাম আর কর্মকর্তাদের পদবি । অর্থাৎ শাসন আর শাসন । আদতে এগুলো হলো সার্ভিস । ইভেন নিযেয়োগকারী সংস্থার নামও কিন্তু সিভিল সার্ভিস !!! এই ইন্ডিয়া , পাকিস্তান আর বাংলাদেশ ছাড়া আর কোথাও এমন নেই । সবখানেই এগুলো হলো সার্ভিস । আর আমাদের এদিকে এসব হলো এডমিনস্ট্রেশন !!! ব্রিটিশদের সাথে আমাদের সম্পর্ক ছিল শাসক আর চাকরের । আমরাও সেটাই ধরে রেখেছি । আজও আমরা এগুলোকে সার্ভিস বানাতে পারিনি । পশ্চিমা দেশ গুলোতে যদি কারো নিকটাত্মীয় থেকে থাকে তাহলে খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন যে তাদের বেতনের ৪০% ট্যাক্স কেটে রেখে দেয় । ওই টাকায় তাদের এইসব সার্ভিস আর মেডিকেল সার্ভিস প্রদান করা হয় । এই হলো সত্যিকারের নাগরিকবান্ধব ফর্মুলা । আর আমরা এখনো সেই ব্রিটিশদের শাসক মার্কা সিস্টেম ত্যাগ করতে পারলাম না । মুখে মুখে খুব সাম্যতার কথা বললেও আমাদের একজনের উপরে এভাবেই আরেকজনের ডমিনেট করার মানসিকতা থেকেই যাচ্ছে । এজন্য আট দশ বছরের পুরোনো প্রেমিকারাও প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে পাত্র হিসেবে পেলে প্রেম ভুলে বিয়েতে বসে যাচ্ছে । ব্রিটিশরা উদ্ভাবনে জয়জয়কার করলেও আমরা সেটা শিখতে পারি নি শিখলাম এই বিভক্তির ধারাটা । বলতেও লজ্জা লাগে বাংলাদেশ এর সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেটে গবেষণার জন্য বরাদ্দ মাত্র ২% এই নিয়ে আবার উন্নত দেশ গড়ার স্বপ্ন !!!! সমাজে যদি কেউ মেডিকেলে বা ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হতে পারে তবে তার সম্মানের আর চাটুকারের অভাব হয় না । কিন্তু এমনটা তো হওয়ার কথা না । দেশ কি ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার দিয়েই চলে কেন যদি ড্রাইভার না থাকতো ? যদি কৃষক না থাকতো ? ইভেন যদি সুইপার নামেরও কেউ না থাকতো ? বাংলাদেশে গ্লাস থেকে পানিটা ঢেলে খেতেও একজন চাকরের দরকার হয় আমাদের , ব্যাপারটা অনেকটা স্ট্যাটাস এরও আমাদের কাছে । আর এই শিক্ষিত ধনী লোকগুলোই যখন ইউরোপ বা আমেরিকায় যায় তখন পড়াশোনার পাশাপাশি থালা বাসনই মাজে রেস্টুরেন্টে । এটা কোন ডিসক্রেডিট বা দোষের কিছু তো না । সে কাজ করে খাচ্ছে এটাই তো যথেষ্ট নয় কি ! বারাক ওবামা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিল । তার মেয়াদকালীনই তার মেয়ে রেস্টুরেন্টে কাজ নেয় । এছাড়া মাঝে মাঝেই এমন নিউজ আসে যে অমুক দেশের পিএম বা প্রেসিডেন্ট সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছেন বা সাধারণ মানুষের মতোই কাজ করছেন । এটা ওদের কাছে খুব স্বাভাবিক । আর আমাদের কাছে বিস্ময়ের । কেননা আমরা নিজেদের নানা ক্লাসে বিভক্ত করে ফেলেছি তো । এজন্য এসব খবর ওদের মিডিয়াতে না আসলেও আমাদের হেডলাইন হয়ে যায় । এই ব্রিটিশ শ্রেণীভেদের আলোকে গড়ে ওঠা সমাজ ব্যবস্থা আর শাসন থেকে যতদিননা সার্ভিসে পরিণত হতে পারছি আমরা ততদিন এদেশ আদৌ উন্নত হবে না ।প্রেমিকা আমার মিথ্যা বলত আমি বলতাম, '' প্রেমিকারা মিথ্যা না বললে ঠিক প্রেমে প্রেম ভাব আসে না।'' প্রেমিকা আমার প্রতারণা করত আমি বলতাম, '' প্রেমিকারা প্রতারণা না করলে প্রেমিকা ঠিক মানায় না।'' প্রেমিকা আমার অযথা রাগ দেখাত আমি বলতাম, '' প্রেমিকারা না রাগলে প্রেমিকরা তো আর বলতে পারতো না, 'রাগলে তোমাকে আরো বেশি সুন্দর লাগে'।'' প্রেমিকা আমার অভিমান করত আমি বলতাম, ''প্রেমিকারা অভিমান না করলে ভালবাসা বাড়ে না।'' প্রেমিকা যখন ভালো মনে কবিতা শুনতে চাইত আমি তখন রবির কোন কবিতা নকল করে দু এক লাইন বলে, নিজের লেখা বলে চালিয়ে দিতাম। প্রেমিকা অসুস্থ থাকলে যখন ভাল কিছু খেতে চাইত আমি তখন মায়ের রান্না খাইয়ে দিয়ে নিজের রান্না করেছি বলে চালিয়ে দিতাম। অভাবে সংসারে স্বামী আজকাল আরো বেশি করে অভাব ডেকে আনছে, হতাশার সাথে পাল্লা দিয়ে তার সিগারেটের নেশা বেড়েছে। মাসে যত টাকার চাল-ডাল লাগে তার চেয়ে বেশি লাগে তার সিগারেট। আমিও অবশ্য এদিক থেকে কচি তুলশী পাতা নই, একটুখানি পান পেঁচিয়ে পান খাওয়ার নাম করে তিনবেলা এক মুঠো করে জর্দা না খেলে আমার জীবন বাঁচে না। কী হয় জানি না, তবে খেতে পারলে ভালো থাকি। সুবিধা হয়, জর্দার খরচ সিগারেটের চেয়ে অনেক কম। বাপের বাড়ি থেকে কিছু আনো আনো বলে স্বামী কোনোদিন জোর করেনি, সে তো জানে বাপের বাড়ির অবস্থা কী, তাই চুপ করেই থাকে। আমার বড় ভাই স্বচ্ছল, ছেলেটাকে মাঝে মাঝে এটাওটা দেয়, তাতে অবশ্য স্বামী খুশিই হয়। সকল মা-বাবাই তার সন্তানের প্রাপ্তিতে খুশী হয়। ইদানিং তার একেবারেই কোনো কাজ নেই। কাপড়ের ব্যবসা ছিল ইসলামপুর, কার সাথে যেন শেয়ারে কিছু কাপড় আমদানি করতে গিয়ে পনেরো লক্ষ টাকা লস করে এখন দোকান ছেড়ে দিয়েছে। হঠাৎ সচল ব্যবসা ছেড়ে চাকরি করা যায় না, একটা ট্রমা কাজ করে। ধাতস্থ হতে সময় লাগে। ধারদেনা শোধ করে দোকান বেঁচা কিছু টাকা অবশিষ্ট আছে। তাই ভেঙ্গে ভেঙ্গে সংসার চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে। টাকাটা নিজের জিম্মায় রেখেছি বলে মেপে মেপে খরচ হচ্ছে, ওর কাছে থাকলে যেত একবারে সব। অনেকে অবশ্য বলে, শুধু পনেরো লক্ষ টাকা লস করে তার এতবড় ব্যবসায় ধস নামেনি। বেশি ব্যয় করেছে সে সুন্দরীদের পিছনে। আমি যে তা জানিনে তা নয়, ও জগতে আগ্রহ থাকলে পুরুষ মানুষের খরচ না করে উপায় নেই। সব নারী টাকা না নিলেও ফাঁকা আওয়াজে বিশ্বাসী নয়, আবার পুরুষ কিছু না দিয়েও পারে না। এটা শুধু তাদের উদারতা নয়, বড় থাকার, ওপরে থাকার বাসনাও। আমি এসব জানি, কম পুরুষ তো দেখলাম না জীবনে। তবে কোনোদিন টাকা নিইনি, কিছুই নিইনি, নিতে আমার বেধেছে। শরীরের ক্ষুধা মিটিয়েছি ভালোবেসে, ভালোবাসা পেয়ে, আবার টাকা নেব কেন? টাকা নিলে ওরা অবৈধ পথে উপার্জন করতে গিয়ে কাউকে ঠকাবে নিশ্চয়ই। তখন আমার বয়স পয়ত্রিশ মনে হয়। বিশ-বাইশ বছর বয়সের একটি ছেলে অনেকদিন ধরে আমাকে ফলো করে। সম্ভবত ও তখন সবেমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। আমি যে খুব শিক্ষিত নয়, এটা ও জানত কিনা জানি না, আবার জানলেই কী, পুরুষ শরীর খোঁজে, ভালোবাসেও, তবে শোয়ার জন্য অন্যকিছু অত দেখে না ওরা। ওর প্রতি আমারও আগ্রহ তৈরি হয়েছিল, তবে ভাবতাম, বাচ্চা ছেলে, দরকার নেই। কিন্তু ও এত বেশি পিছে লেগে থাকল, শেষে একদিন কথা হল। এভাবে কয়েকদিন কথা হল। এরপর ও নিয়মিত বাসায় আসত। কতটা যে ভালোবাসত ছেলেটা! তবে যতক্ষণ থাকত ততক্ষণই, পরে আর নাগাল পাওয়া যেত না। সম্ভবত ওর স্বভাবটাই ছিল ওরকম, যাকে পায় ভালোবেসে পেতে চায়। আমি নিজেকে দেখেই বুঝি, একজনকে ভালোবেসে সবাই সুখী হতে পারে না, পারার কথা না। এটা অনেক নারীর জন্যই সত্য। পুরুষই বা কেন এক নারীতে সুখী হবে, অবশ্য সামার্থ থাকলে পৃথিবীর কোনো পুরুষই তা হয় না। আমার স্বামী যেমন, আমার কাছ থেকে ছাড় পেয়ে পেয়ে কী যে করেছে! তবে ওর একটা গুণ আছে, প্রেম বৈ কিছু করেনি। অপ্রেমে কারো সাথে বিছানায় যায়নি কোনোদিন, এটা আমি বুঝি, এতটুকু চিনি ওকে। ঐ ছেলেটা আমাকে বুঝিয়েছিল, জীবনে সৎ হলেও সতী হতে নেই। সততা আর সতীত্ব এক নয় কখনো। দুটো একসাথে হতে নেই, তাহলে জীবন বাঁচে না। ধীরে ধীরে ও আমার প্রেমে পড়েছিল বোধহয়, আমি যে ওর সঙ্গ খুব উপভোগ করতাম, এটা হয়ত ও টের পেয়েছিল। এতে পুরুষের গর্ব হয়, নারীকে সুখী করতে পারলে ওরা নিজেদের জয়ী ভাবে। ও একদিন ছোট্ট একজোড়া সোনার কানের দুল নিয়ে এসে হাজির। এসে বললে, টিউসনির বেশ কিছু টাকা পেয়েছি, এটা তোমার জন্য কিনলাম। কানের দুলটা আমি পরেছিলাম, ওটা পরেই ঐদিন ওর সাথে মিলিত হয়েছিলাম খুব করে। ঐদিন ওকে খুব আদর করেছিলাম মনে পড়ে, ও হয়ত প্রথমে ভেবেছিল উপহার পেয়ে আমি আত্মহারা হয়ে গেছি। ও আসলে প্রতিদিনই কিছু না কিছু খেতে দিতাম। ঐ সময় স্বামী গিয়েছিল ব্যবসার কাজে তিনদিনের জন্য সিলেট। যদিও আমি জানি, এসব ব্যবসার কাজের কথা বলে সে তার কোনো না কোনো প্রেমিকাকে নিয়ে ট্যুরে যায়। যাগগে। আজকে ওকে বললাম, থাকতে। ও একবাক্যে রাজি হয়ে গেল। বলা যায়, এই প্রথম দীর্ঘক্ষণ একসাথে থাকা। বিভিন্ন গল্পগুজব। ওকে টিভি রুমে রেখে রান্না চাপালাম। বেশি সময় নষ্ট করব না বলে মিক্সড মশলা দিয়ে বিরানী রান্না করলাম। দু’জনে খেলাম, গল্প করলাম। কানের দুলটা পরেই ছিলাম, ও দু’একবার বলেছে, “তোমাকে খুব মানিয়েছে।” রাতটা আমরা একসাথেই কাটালাম। সকালে ও এ পথেই ভার্সিটিতে যাবে। যাওয়ার সময় আমাকে একটা চুমু খেল, আমি ওর হাতে কানের দুলটা দিতেই চমকে গেল। আমি বললাম, দেনা-পাওনার কথা বললে তোমারই বরং পাওনা হয়েছে। রাখো, তোমার বউকে দিও এটা। আজকেই আমাদের শেষ সাক্ষাৎ, আর দেখা হবে না। একটু আগে চুমু খেলে, এটা যদি ভালোবাসার হয়ে থাকে, তাহলে আমার কথা শোনো, কখনো আর আমার সাথে দেখা করার চেষ্টা কোরো না। ও কথা রেখেছিল, আর কোনোদিন দেখা হয়নি। আমার খুব ইচ্ছে করে ওর সাথে দেখা করতে। জীবনের একটা অসমাপ্ত অধ্যায় হয়ে রয়েছে ও। বিস্ময়কর হচ্ছে, আমি ওর নাম জানিনে, শোনা হয়নি। ওরও আমার নাম জানার কথা না, বলা হয়নি, আসলে কারো নাম জানাটা প্রয়োজন হয়নি। ইদানিং আমার ছেলেটা খুব মনমরা হয়ে থাকে। ঢাকা শহরে চারপাশের এত জৈৗলুস দেখে ওর এতটা চেপে চলতে কষ্ট হয়। স্কুলের টিফিনের জন্য দশ টাকা দিই, তাতে কী এমন টিফিন হয়! মাঝে মাঝে নিজে কিছু বানিয়ে দিই, কিন্তু প্রায় সময়ই ঝটপট খাওয়ার মত বাসায় কিছু থাকে না। টাকার অভাবে ওর রিক্সায় চলা হয় না। ঘামতে ঘামতে স্কুল থেকে এসে একেবারে নেতিয়ে পড়ে। স্কুল কোচিং মিলিয়ে ছেলেটা প্রায় ছয় ঘণ্টাই বাইরে থাকে। স্বামী একটা চাকরি নিয়েছে। ৯টা থেকে ৯টা পর্যন্ত অফিশ। বেতন যা তাতে বাসা ভাড়াই হয় না। মাঝে বছর দুই বোধহয় আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। আবার আমার শরীর-মন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। চল্লিশোর্ধ নাতিদীর্ঘ স্বল্প-স্থুল শরীর, এ ধরনের নারীদের প্রতি পুরুষের বোধহয় আলাদা আকর্ষণ থাকে। আবার আমি ওদের পাত্তা দিতে শুরু করেছি। কাউকে চোখ রাঙ্গাই, কারো প্রতি আবার একটু মুচকি হাসি দিই, অথচ দু’জনের চাহিদা একই, চাওয়ার ধরণও একই। শুধু আমার পছন্দই আমার দৃষ্টিভঙ্গী ঠিক করে দেয়। এ যেন একই ডালে একইভাবে বসা কাকটাকে তাড়িয়ে কোকিলটাকে মুগ্ধ হয়ে দেখা! হঠাৎ মা স্ট্রোক করে একরকম বিছানায় পড়ে আছে। বাবাও খুব একটা সচল নেই। রিটায়ার্ড করার পর যা কিছু টাকা পেয়েছিল তা দিয়েই চলছে। কিন্তু বর্তমানে আর চলছে না। আমি গেলে মা এমনভাবে তাকিয়ে থাকে, মনে হয় এর চেয়ে বরং মরে যাই। মা যে আমার কাছ থেকে ভালোবাসা-সহযোগিতা চায়, তা বুঝতে পারি, কিন্তু একটা নিষ্ঠুরতার মোড়ক নিয়ে আমাকে পিছন ফিরতে হয়, যেন মিছে আশ্বাস না পায়। সবদিকে হাহাকার, পাল্লা দিয়ে হাহাকার বেড়েছে আমার শরীরেও। ওটা ছাড়া আমি বাঁচি না, চাই, চাই, চাই, বিধি-নিষেদগুলো দুমড়ে মুচড়ে চাই। নারী বলে অসুবিধা যেমন আছে, সুবিধাও কিছু আছে, চাইলেই পাওয়া যায়, শুধু একটু ‘না না’ করতে হয় পুরুষগুলো প্রতারক বলে। যার কাছে ওরা যায় ক্ষুধায়, মোহে বা ভালোবেসে আবার তাকেই বেশ্যা বলে চুনের থেকে পান খসলে। হটাৎ স্বচ্ছলতা দেখে আমার স্বামী ঠাহর করতে পারছে না কিছু। আজকে জানতে চাইল, বলোতো বিষয়টা কী? আমি যা টাকা দেই তোমাকে তা দিয়ে বাজার এত ভালো হওয়ার কথা তো না। কীভাবে কী করছ? বললাম, বড় ভাই প্রতি মাসে দশ হাজার করে টাকা দিচ্ছে, বলেছে, যদ্দিন আমাদের আয়-উপার্জন না বাড়ছে ততদিন দিবে। তবে তোমাকে বলতে না করেছে। পুরুষ মানুষ, চুরি করে নিলেও চেয়ে নিতে পারে না, তাই জানি যে সে আর যাচাই করতে যাবে না। বড় ভাই তার বোনকে টাকা দিচ্ছে এটা নিয়ে তার ভাবনারও কিছু নেই। ওদিকে মা এখন প্রায় শয্যাশায়ী। তার কাজ করার জন্য একটা কাজের মেয়ে রেখে দিলাম। ভালো টাকা পয়শা না দিলে এ ধরনের পরিচর্যার কাজ করতে কেউ রাজি হয় না এখন। খাওয়া থাকা বাদেও ছয় হাজার টাকা দিতে হয় তাকে। এর বাইরে মাকে ফলমূল ওষুধও কিছু কিনে দেয়ার কথা। সব মিলিয়ে বাবার হাতে প্রতি মাসে দশ হাজার টাকা তুলে দিই। বাবাকে বললাম, তোমার জামাইয়ের উপার্জন বেড়েছে, বলল, তোমাদের প্রতি মাসে দশ হাজার টাকা করে দিতে। তবে বলেছে, উনি যে টাকা দিচ্ছে এটা তোমার ছেলেকে যেন না জানাই। বাবা খুশি হয়, জামাই টাকা দিচ্ছে এটা কাউকে না জানাতে পারলেই সে খুশি। সবই ঠিকঠাক চলছে। স্বামী, সন্তান, পিতা-মাতা সবাই ঠিক অছে, ঠিক নেই শুধু আমি। বুঝলাম, উপভোগের জন্য ফুলের বাগান করা, আর বিক্রীর জন্য করা এক কথা নয়। এখন বাগানের পরিচর্যা করতে গেলেই ঘেন্যা লাগে, গা গিনগিন করে, যেন সব সুখ পালিয়েছে নিমেষে!দেশের কষ্টার্জিত স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে আধুনিক এবং শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলা বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। সরকার চায় দেশের সার্বিক অগ্রগতি যেন এমন এক দৃঢ় ভিতের উপর প্রতিষ্ঠিত হয় যাতে আমরা যে কোন ক্ষেত্রে বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারি। কেননা দেশপ্রেমিক প্রতিটি নাগরিকের একান্ত চাওয়া আমরা যেন কোন কিছুতেই বিশ্বের অন্যান্য দেশের থেকে পিছিয়ে থাকি না থাকি। সরকারও চায় বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকই যেন আত্মবিশ্বাসী আর গর্বিত মানসিকতায় সমৃদ্ধ হতে পারে। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই বর্তমান সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে আরও আধুনিক এবং শক্তিশালী করে গড়ে তুলছে। আজকে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরিচালিত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যাচ্ছে। সেখানে অন্যান্য সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে তাঁদের কাজ করতে হয়। সেক্ষেত্রে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা যেন কোন ক্ষেত্রে পিছিয়ে না থাকে সেজন্যই কিভাবে তাঁদের আরো উন্নত, সমৃদ্ধ করা যেতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ এবং সর্বাধুনিক সরঞ্জামে সজ্জিত করে আরও শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলছে। পৃথিবীর অনেক বড় বড় আর উন্নত দেশ আছে। তাদের সবই আছে, কারণ তাদের সম্পদ আছে। পক্ষান্তরে এখনও আমরা সম্পদের সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করতে পারিনি। কিন্তু তারপরেও তো আমরা একটা স্বাধীন দেশ। তাই স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে যা যা থাকা দরকার, যদি অল্প পরিমাণেও হয় আমাদেরও সেটা থাকা প্রয়োজন। উন্নত দেশের মত অত বেশি আমরা হয়তো পারবো না, কিন্তু তারপরেও আমাদেরও যা আছে তা নিয়ে যেন আমরা গর্ব করে বলতে পারি এবং বিশ্ব সভায় যেন মাথা উঁচু করে চলতে পারি – সেটার গুরুত্ব অপরিসীম। আর সে দিকে লক্ষ্য রেখেই বর্তমান সরকার আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।আমরা বাঙ্গালী আমাদের সংস্কৃতি কালচার আমাদের আদিপুরুষদের কাছে থেকে পাওয়া ভিন্ন সংকৃতি দিয়ে আমাদের সংকৃতিকে নস্ট করা ঠিক না, করা উচিতও না। বর্তমান সময়ে আমি চোখ খুলেই দেখতে পাই সবাই শিক্ষীত শুনে খুব ভালও লাগে, কুন্তু কি শিক্ষা যে ছাত্ররা গ্রহন করছে তা বুঝে উঠতে পারি না নীতি নৈতিকতার শিক্ষাত এই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে উঠেই গেছে। এখন আর গুগুল দিয়ে খুজলেও পাওয়া যায় না। নৈতিকতা ছাড়া আমার মনে হয় সকল শিক্ষাই অচল। মানুষ এতটাই উগ্র যে কখন যে কি করতে কি করে বসে কি করে ফেলে তার কোন ঠিক নেই। যারা কাস্টমার রিলিটেড কাজ করে বা মানুষদের নিয়ে কাজ করে তারাই বলতে পারে যে মানুষ কতটুকু নিবোর্ধ। এমন শিক্ষিত মানুষও হাজার হাজার দেখেছি যে ব্যবহার এত খারাপ যে মনে হয় জীবনে কোন প্রতিষ্ঠানেতো দুরের কথা কখনো ভালো ব্যবহার যে কি তা কখনো কেউ শিক্ষায় নি। বাঙ্গালী তুমি মানুষ হও। বিশ্ব দরবারে ভাল মানুষ হিসাবে মাথা উচু করে দাড়াও। বিশ্ব তোমাদের চিনবে, মনে রাখবে বাঙ্গালী হিসাবে।আমরা বাঙ্গালী আমাদের সংস্কৃতি কালচার আমাদের আদিপুরুষদের কাছে থেকে পাওয়া ভিন্ন সংকৃতি দিয়ে আমাদের সংকৃতিকে নস্ট করা ঠিক না, করা উচিতও না। বর্তমান সময়ে আমি চোখ খুলেই দেখতে পাই সবাই শিক্ষীত শুনে খুব ভালও লাগে, কুন্তু কি শিক্ষা যে ছাত্ররা গ্রহন করছে তা বুঝে উঠতে পারি না নীতি নৈতিকতার শিক্ষাত এই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে উঠেই গেছে। এখন আর গুগুল দিয়ে খুজলেও পাওয়া যায় না। নৈতিকতা ছাড়া আমার মনে হয় সকল শিক্ষাই অচল। মানুষ এতটাই উগ্র যে কখন যে কি করতে কি করে বসে কি করে ফেলে তার কোন ঠিক নেই। যারা কাস্টমার রিলিটেড কাজ করে বা মানুষদের নিয়ে কাজ করে তারাই বলতে পারে যে মানুষ কতটুকু নিবোর্ধ। এমন শিক্ষিত মানুষও হাজার হাজার দেখেছি যে ব্যবহার এত খারাপ যে মনে হয় জীবনে কোন প্রতিষ্ঠানেতো দুরের কথা কখনো ভালো ব্যবহার যে কি তা কখনো কেউ শিক্ষায় নি। বাঙ্গালী তুমি মানুষ হও। বিশ্ব দরবারে ভাল মানুষ হিসাবে মাথা উচু করে দাড়াও। বিশ্ব তোমাদের চিনবে, মনে রাখবে বাঙ্গালী হিসাবে। সম্পর্ক অনেকটা সমুদ্রের বেলাভূমির মতো। চিরস্থায়ী নয়। নাম থাক আর নাইবা থাক কালের ঢেউ এসে সব সম্পর্ক ভেঙ্গে দেয়। আবার ওপারের ডাক এলে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে একা একা পাড়ি জমাতে হয় সম্পৃক্ত আমাদের। জগতের সব সম্পর্কের নাম দেয়া যায়না। কিছু কিছু সম্পর্কের নাম দিতে গেলে অন্য অনেক সম্পর্ক ভেঙে যায়। অনেক সামাজিকতা উলট পালট হয়ে যায়। ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়া চড়ুইপাখিটি কাতরাতে কাতরাতে বিদ্যুৎ খুঁটি আঁকড়ে বেঁচে থাকার সংগ্রাম করছে। এই দৃশ্য কি এক অদ্ভুত সম্পর্কের বাঁধনে আমার মনকে মেঘলা করে দেয়। হে আমার বিনিসুতোর বাঁধন, চলো আমাদের একযুগ একসাথে পথচলাকে সম্পর্ক নামক শব্দের ফ্রেমে বন্দি করি। সব কাঁচের দেয়াল ভাঙি। জড়িয়ে পড়ি সম্পর্কের ঠুনকো খেয়ালে। এই তো সেদিন চোখ বরাবর প্রখর রোদ্দুর আটকাতে হাত উঁচিয়ে যখনি কপাল ঢাকছি।পরক্ষনেই আমার মুখোমুখি দাড়ায়ে তুমি।আরো একটু আমার পানে ঝুঁকে বললে তুমিই নাকি আমার ছাতা। তাহলে কি তুমি আমার রোদ বৃষ্টির ছাউনি ? আচ্ছা,আজ থেকে আমাদের সম্পর্কের নাম দিলাম "রোদ বৃষ্টির ছাউনি"। তোমার কনুই ভাজে ভর দিয়ে নির্ভয়ে পথ চলি।আমার বাম কব্জিটা শক্ত করে ধরে রাস্তা পার করলে। তাহলে কি তুমি আমার নির্ভরতার আশ্রয় ? তবে হে, আমাদের সম্পর্কের আরেকটা নাম হতে পারে"নির্ভরতার আশ্রয়"। শিল্পী জহির আহমদ এর "কত রাত আমার ভেসেগেছে আঁখিজলে, কত দিন আমার কেটে গেছে বিফলে" এই গানটা গুন গুন করে গাইতে প্রায়ই। আগাগোড়া কষ্টে মোড়ানো গানটা শুনলেই, তোমার তরে অদ্ভুত এক মায়া হত আমার।কোন সম্পর্কের বাধনে আমার ভিতরবাড়ি তখন দুমড়ে মুচড়ে যেত বলতে পারো? তাহলে কি আমরা পরস্পরের ব্যাথা দেখার আয়না? তাহলে আমাদের সম্পর্কের নাম হতে পারে "আয়না"। হাটি হাটি পায়ে পায়ে তুমি আমায় আলোর সন্ধান দিয়েছো। জীবনের সুপথ, কুপথ,ঘুরপথ সবই চিনিয়েছো। আমার শৈশবে যখন শুধু হাফ প্যান্ট পরে রাস্তাঘাটে,বাড়ির উঠনে খেলতাম।তখনই তুমি আমার চোখে মুগ্ধতা খু্ঁজে পেয়েছো।।আমার চোখে আবিষ্কার করেছো তোমার তরে টান। সেই থেকে পথ চলা।তাহলে কি তুমি আমার প্রথম মুগ্ধতা? তাহলে আমাদের সন্পর্কের নাম হোক "মুগ্ধতা"। আমার অবুঝ আবদার মেটাতে কতবার তুমি কলেজ পড়ুয়া ছাত্র হয়েছো। বয়সের ব্যবধান ঘুচিয়েছো। তাহলে কি তুমি আমার বায়না মেটানোর মেশিন? ঠিক যেন তুমি আমার "জাদুর মেশিন"। জীবন তোমাকে নির্দয়ভাবে ঠকিয়েছে। বিবেকের দায়ে তুমি নিজেকে মৌলিক সুখ থেকে বঞ্চিত করেছো। আমি, তুমি আর উপরওয়ালা ছাড়া কেউ জানে না এসব।বিশ্বাস করো, তুমি পুরোটাই মানুষ। শুধুমাএ পুরুষ নও। প্রবলভাবে আমি এই মানুষটির সান্নিধ্য চাই। তাহলে কি তুমি আমার প্রথম তৃষ্না? তুমি বলতে আমার বিয়ের পর ব্যাগ ভর্তি বাজার নিয়ে প্রতি সপ্তাহে আমার শশুর বাড়ি যাবে । আমার পতির সাথে বসে আমার রান্না খাওয়ার স্বপ্ন তোমার। তাহলে কি তুমি আমার অলিখিত ভবিষ্যৎ এর কান্ডারি? তবে আমদের সম্পর্কের নাম দিলাম" জীবন তরীর কান্ডারি"। আব্বার চিরবিদায়ের সেই রাএিরে আমি হাউমাউ করে কেঁদেছিলাম। তুমি পরম স্নেহে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছো,আর কাঁদিস না পাগলী, আমি ও কি মরে গেছি? তাহলে কি তুমি আমার ব্যাথা লাঘবের মলম? তবে আমাদের সম্পর্কের নাম " ব্যাথা নিরাময়ের মলম"। কোন সম্পর্কের হাতছানিতে তুমি আমায় সুখি করেছো।আমার সঙ্গি না হয়ে ছায়া হয়েছো।আমাকে আগলে রেখেছো।আমায় উপযুক্ত পাত্রস্থ করতে চেয়েছো।শুধু এই আমার টানে আমাদের দায়িত্ব নিয়েছো।তাহলে কি তুমি আমার ইহকালের অভিভাবক? আচ্ছা,মধ্য রাতে আমার নাম্বার ওয়েটিং পেলে তুমি পাগল পাগল হতে কেন? আমার মুখ দেখলে কেনই বা তোমার ক্লান্তি দূর হত? তাহলে কি আমিই তোমার সুখ পাখি? তবে তাই, আমরা দুজন দুজনার "সুখের নীড়"। ছেলে বন্ধুদের সাথে বাহিরে ঘুরতে বা খেতে গেলে আমার নিজেকে চোর মনে হতো।তোমার সামনে পরলে আমায় গুলি করে মারতে জানি।তাহলে কি তুমিই আমার উদ্বিগ্নতা? তাহলে সম্পর্কের নাম দিলাম "উদ্বিগ্নতা"। আমার হুমায়ূন,মাসুদ রানা প্রিয়।তা নিয়ে তোমার কত ভয়।এসব পড়ে পড়ে আমি নাকি অসংযত সম্পর্কে জড়িয়ে যাবো।তাহলে কি তুমি আমার সংযত বাধন ছিলে?তবে তাই, আমাদের সম্পর্কের হোক "সংযত বাধন"। এইতো সেদিন যখন আমার পাত্র, অথবা পাত্রের আমায় ঠিক পছন্দ হচ্ছিলনা।খুব আপন করে বলেলে , সব বাদ দাও।দেখতো, এই আমায় দিয়ে চলবে না তোমার? আমি সম্মতি জানালাম।সব পিছুটান মেলে ধরলে।অশ্রুভারাক্রান্ত মনে বললে। আমি নাকি তোমার কাছে ততটা ভালো থাকবো না। যতটা ভালো থাকবো দূরে থেকে তোমার কাছে থাকলে।এজন্যই কি আমায় ভালো রাখতে, আজ তুমি দূর আকাশের তারা হয়ে গেলে? তুমিই ঠিক, দেখ,আমি আজ কত্ত ভালো আছি,একটুও কাঁদি না,আমার সব অনুভুতি, কান্না তুমি নিয়ে গেছো। হঠাৎ একটা ফোনকল আমায় নিস্তব্ধ করে দিল।সেদিন আমার আহাজারীতে একজন সাংবাদিক যখন আমাকে জিঙ্গেস করলেন,আমি তোমার কে হই? তোমার লাশের সামনে বসে বলার মতো আমাদের সম্পর্কের একটা নাম ও খুঁজে পাইনি।বলতে পারিনি আমাদের বিনিসুতোর বাধনের কথা। তুমি কি ওপার থেকে দেখতে পাচ্ছ?আমি বান ডেকে যাওয়া বর্ষায় ভিজছি।সাথে আমার " তুমি ছাতা "নেই।আমি আজ জীবনের যাঁতাকলে পৃষ্ট।আমার "নির্ভরতার আশ্রয়" তুমি নেই।আমি বেদনায় নীল হয়ে গেলেও তা দেখার "আয়নাটা"নেই। আজ আমার ব্যাথা কমানোর "প্যানাসিয়া" সেই তুমি ঔষধটাই নেই। জানো,আমি আর আজকাল কোন কিছুতেই মুগ্ধ হইনা।আমার আর আগের মতো ব্যাথা নেই, তৃষ্না নেই,ক্ষুধানেই। মাথার উপর ছায়া নেই।তিরিক্ষি সূর্য আমাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দিলেও, কেউ জানবেনা,কেউ দেখবেনা।কে জানে হয়তোবা তুমিও!!!।অাজকের পর্বটি রং দিয়েই সাজিয়েছি। অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে, অাকাশ, সমুদ্রের পানি নীল দেখায় কেন?মেঘের রং কেন সাদা? সূর্যকেই বা কেন লাল, কমলা রংয়ের দেখায়? এসব প্রশ্নের উত্তর নিয়েই অাজকের পর্বটি সাজিয়েছি। অাশা করি অাপনাদের ভাল লাগবে। ১) অাকাশ নীল কেন? সূর্য থেকে যেই দৃশ্যমান সাদা অালো পৃথিবীতে পৌছায়, তা অনেকগুলো বর্ণালীর মিশ্রণ। উপরের চিত্রটি লক্ষ্য করুন, বেগুনী, নীল, অাসমানী, সবুজ, হলুদ, কমলা এবং লাল। বেগুনী অালোকরশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম, তারপর নীল এভাবে বৃদ্ধি পেয়ে লাল রংয়ের ক্ষেত্রে তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি। অামাদের বায়ুমন্ডলে অসংখ্য বস্তু কণা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে অাছে। সূর্য থেকে যখন অালোকরশ্মি পৃথিবীর দিকে অাসে, তখন এই কণাগুলো অালোকরশ্মির বিভিন্ন বর্ণালীকে বিভিন্ন মাত্রায় বিক্ষিপ্ত করে। যেহেতু কণাগুলো খুবই ক্ষুদ্র, তাই ক্ষুদ্র তরঙ্গের অালোকরশ্মিই সবচেয়ে বেশি বিক্ষিপ্ত হয়। বর্ণালীতে অামরা দেখতে পাচ্ছি, বেগুনী রংয়ের অালোকরশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম, তারপর নীল। তাহলে তো বেগুন রংয়ের অালোকরশ্মি সবচেয়ে বেশি বিক্ষিপ্ত হওয়ার কথা! তাহলে অাকাশ বেগুনী না হয়ে নীল দেখায় কেন? এর কয়েকটি কারন রয়েছে। প্রথমত, সূর্য থেকে যেই সাদা রংয়ের অালো পৃথিবীতে অাসে তাতে বেগুনী রংয়ের অালোকরশ্মি তুলনামূলকভাবে কম থাকে। দ্বিতীয়ত, বেগুনী অালোকরশ্মি বায়ুমন্ডলেই কিছুটা শোষিত হয়। তৃতীয়ত, অামাদের চোখে তিন ধরনের রং সংবেদনশীল কোষ অাছে, নীল, লাল এবং সবুজ। এই কোষগুলো বেগুনী রংয়ের অালোকরশ্মির প্রতি অপেক্ষাকৃত কম সংবেদনশীল। এসব কারণে অাকাশকে অামরা বেগুনী দেখি না। বেগুনী রংয়ের পরই নীল রংয়ের অালোকরশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম। তাই এটি সবচেয়ে বেশি বিক্ষিপ্ত হয়। ফলে অামরা অাকাশকে নীল দেখি। ২) তাহলে সমুদ্র নীল দেখায় কেন? সমুদ্রের পানির কণাগুলো বেশ বড়। এগুলো বৃহৎ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের অালোকরশ্মিগুলো(লাল, কমলা, হলুদ) শোষণ করে নেয়। বাঁকিগুলোকে বিক্ষিপ্ত করে। ফলে অাকাশের মত সমুদ্রকেও অামরা নীল দেখি। ৩)কিন্তু মেঘ সাদা কেন? মেঘের ভেতরে যেই পানির অণুগুলো রয়েছে, তা সব রংয়ের অালোকরশ্মিকেই সমভাবে বিক্ষিপ্ত করে। যার ফলে অামরা মেঘকে সাদা দেখি। ৪)সূর্যকে লাল-কমলা দেখায় কেন? সূর্য যখন ওঠে কিংবা অস্ত যায়, তখন এটি দিগন্তের কাছাকাছি অবস্থান করে। সহজ কথায়, এই দুটি ক্ষেত্রে সূর্য থেকে অালোকরশ্মি অামাদের চোখে পৌছানোর জন্য সবচেয়ে বেশি পরিমাণ বায়ুমন্ডলকে ভেদ করতে হয়। ফলে কম তরঙ্গদৈর্ঘ্যের অালোকরশ্নি বেশি বিক্ষিপ্ত হয়, অার বৃহৎ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের অালোকরশ্মি কম বিক্ষিপ্ত হয়। যেহেতু বৃহৎ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের অালোকরশ্মি কম বিক্ষিপ্ত হচ্ছে, তাই এগুলো সহজেই বায়ুমন্ডল ভেদ করে অামাদের চোখে অাসে। তাই সূর্য ওঠা এবং অস্ত যাওয়ার সময় এটিকে লাল-কমলা রংয়ের দেখায়। কিন্তু দুপুরবেলা সূর্য যখন মাথার উপরে থাকে, সূর্যের অালোকরশ্মিকে পৃথিবীর পৃষ্ঠে অাসতে সবচেয়ে কম বায়ুমন্ডল ভেদ করতে হয়। ফলে অালোকরশ্মিগুলোও সবচেয়ে কম পরিমাণে বিক্ষিপ্ত হয়। এজন্য সূর্যকে তখন সাদাটে দেখায়। সূর্যকে মহাশুন্য থেকে দেখলেও এটাকে সাদাটেই লাগবে। এটাই সূর্যের অাসল রং। ৫) অাচ্ছা বলুন একটি অাপেলকে লাল দেখায় কেন? কারন অাপেল লাল রং ব্যাতিত অন্য রংয়ের অালোকরশ্মিরগুলোকে শোষণ করে নেয়। ফলে শুধুমাত্র লাল রংয়ের অালোকরশ্মিই অাপেল থেকে প্রতিফলিত হয়। এজন্যই অামরা অাপেলকে লাল দেখি। অাজকে অার নয়। অাগামী পর্বে অাবারও অাপনাদের সামনে নতুন কোন বিষয় নিয়ে হাজির হবো ইনশাঅাল্লাহ। সবাই ভাল থাকবেন। সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৩ ১৯০ বার পঠিত১৪ ৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর ১. ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৭ ০ নূর আলম হিরণ বলেছেন: শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। রঙের খেলা গুলো জেনে ভালো লাগলো। ২. ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪২ ০ রাকিব আর পি এম সি বলেছেন: অাপনাকেও ধন্যবাদ। ৩. ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১০ ০ রুরু বলেছেন: ভালো লাগলো। দরকারি পোষ্ট। ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৮ ০ লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ ৪. ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৬ ০ বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এই দুনিয়া রংয়ের খেলা কত রংয়ের বাহার রংয়ে রংয়ে ভরা পোষ্টে মন পেল জ্ঞানের আহার ++++ ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২০ ১ লেখক বলেছেন: ছন্দে ছন্দে অাপনার মতামত প্রকাশের পদ্ধতিটি অামার দারুন লেগেছে। ধন্যবাদ অাপনাকে। আপনার মন্তব্য লিখুন কি বোর্ড বেছে নিন: ভার্চুয়াল ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয় english Choose File ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট) পোস্ট পর্যবেক্ষণ এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে : আলোচিত ব্লগ অনন্তের সাথে একা লিখেছেন নীলপরি, ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৫৯ সুখটাকে টের না পেয়ে দেখি অসুখের বিমা করানো হয়নি! সেই অসুখের সমুদ্রঘূর্ণির উথাল-পাথালে আবদ্ধ হয়ে , বড্ড লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে ! কিন্তু , কি করে লিখবো ? আকস্মিক... ...বাকিটুকু পড়ুন পুরুষদের জন্য সবচেয়ে বড় ফিতনা........ লিখেছেন ই জাহিদ, ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:৫১ বাগদাদে সালিহ নামে এক মুয়াজ্জিন ছিল। সে টানা চল্লিশ বছর আজান দিয়েছে। খুবই ধার্মিক হবার কারণে সবাই তাকে খুব পছন্দ করতো। একদিন সে মিনারে উঠে আজান দিতে যাচ্ছিলো। হঠাৎ করে... ...বাকিটুকু পড়ুন হত্যা, ক্যু, গুম, অপহরণ, রাজনৈতিক অংগণে শুন্যতার সৃস্টি করেছে লিখেছেন চাঁদগাজী, ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:০২ মোগল সম্রাট আওরংগজেব এক ভাইকে হত্যা করে, এবং বাবাকে বন্দী করে নিজের ক্ষমতাকে পোক্ত করেছিল; এই অবস্হা দেখে বাকী ভাইয়েরা রাজনীতি ফেলে প্রাণ নিয়ে পালায়েছিল; এতে আওরংগজেবের... ...বাকিটুকু পড়ুন কপাট লিখেছেন নাগরিক কবি, ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:১১ চলছি'তো চলছি দুপায়ে ভর করে আবরিত অন্ধকারে অবহেলিত সব সাদা কাগজে দীর্ঘশ্বাস আমার আর সহে না আমার আর সহে না আমার আর সহে না। অবজ্ঞার দৃষ্টি ঢেলে দেয়া বাহু খুলে ফুসফুস ভরে নিশ্বাসে... ...বাকিটুকু পড়ুন হিন্দু ও দূর্গা দেবী আমি যখন উচ্চমাধ্যমিকে পড়ি, তখন পারিবারিক নিয়ম ছিলো - মাগরিবের আজানের সাথে সাথে বাসায় প্রবেশ করতে হবে। নামাজ পড়ে বিকেলের হালকা খাওয়া শেষ করে পড়ার টেবিলে বসতে হবে। কোন কারনে যদি বাসায় ফিরতে দেরী হতো, হাজারটা প্রশ্নবাণে জর্জরিত হবার পাশাপাশি তীব্র ভৎসনা কপালে জুটত। সময়সীমা 'মাগরিব' থেকে মুক্তি পেলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অল্প কিছুদিন পরেই। ব্যাপারটা এত দ্রুত ঘটেছিলো, যে বাসায় ফেরার স্বাধীনতায় অভ্যস্ত হতে আমার আরো মাস লেগেছিলো। ফলে এই আমি যখন পত্রিকায় পড়ি যে, উচ্চমাধ্যমিকে পড়া কোন ছেলে বা মেয়ে রাত দশটায় কারো জন্মদিনের দাওয়াতে যাচ্ছে, আমার পক্ষে সেটার স্বাভাবিকতা মানতে কষ্ট হয়। বিষয়টা আমার কাছে অস্বাভাবিক এবং পারিবারিক অনুশাসনের অভাব বলেই মনে হয়। যখন আরো শুনি এই জন্মদিনের দাওয়াতে গিয়েই সেই মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে, নিজেকে আবিষ্কার করি এক অদ্ভুত বিভাজনের কেন্দ্রস্থলে। যদি মোটাদাগে বলি, তাহলে কে কখন বাইরে যাবে, কতক্ষণ বাইরে থাকবে, কি করবে না করবে, যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু যখন আমরা এমন কোন সমাজে বাস করি, যেখানে স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তা বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ সেখানে এই ধরনের ঘটনার দায় কিছুটা হলেও নিজেদের কাঁধে নিতে হবে। এটাই কঠিন বাস্তব, যার স্বাদ খুবই তিতা। সাম্প্রতিক সময়ে 'জন্মদিন' কেন্দ্রিক যে কয়টি ধর্ষণ-ঘটনা ঘটেছে, সেখানে আমরা ভিকটিমের পরিচয় প্রাথমিকভাবে ভাবে গোপন রাখতে সক্ষম হলেও পরবর্তীতে তদন্তের খাতিরে তাদের পরিচয় কিছুটা হলেও প্রকাশিত হয়েছে। এই পরিচয়ের প্রেক্ষাপট থেকে বলা যায়, যাদের সাথে দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই ধরনের নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে তারা প্রত্যেকেই তুলনামুলকভাবে পারিবারিক অনুশাসনের কিছুটা দুরে ছিলেন। আমাদের মেয়েরা এখন আগের চাইতে অনেক স্বাবলম্বী এবং স্বাধীনচেতা। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট এবং ভারতীয় উপমহাদেশে নারীর অধিক ক্ষমতায়নের সংস্কৃতি বর্তমানে আগের চাইতে অনেক বেশি প্রতিষ্ঠিত। পাশাপাশি, বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থা প্রচণ্ড রক্ষণশীল। আমাদের নারীরা অনেকেই চেষ্টা করছেন এই রক্ষণশীলতার গণ্ডি থেকে বের হয়ে আসতে। সমাজের তথাকথিত রক্ষাকর্তা, কাঠমোল্লা (যারা ধর্মকে না বুঝে, ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারের খাতিরে নেতিবাচকভাবে প্রয়োগ করছেন) ইত্যাদির রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নারীদের এই অর্জন একেবারেই ফেলনা নয়।) ফলে, এখানে অল্প কয়েকজনের আবেগ তাড়িত ভুল আমাদের নারীদের এই অগ্রযাত্রায় বিশাল নেতিবাচক ভূমিকা ফেলছে এবং প্রশ্ন বিদ্ধ হচ্ছে তাদের স্বাবলম্বন এবং স্বাধীনতা। অতি সত্য কথনের একটা সমস্যা হলো- তা অতি তিতা এবং শৈত্যপ্রবাহের মতই তীব্র যা মাঝে মাঝে সহ্য করা বেশ কঠিন। যেমন এই সকল জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে যারাই বিপদে পড়েছেন, দেখা গেছে তারা কোন না কোন ভাবে 'মিডিয়া' সংশ্লিষ্ট। যেহেতু বাংলাদেশের মিডিয়ায় তৃণমূল পর্যায়ে 'আদান প্রদান' এবং প্রভাবশালীদের 'রেফারেন্স' এর সংস্কৃতি এখনও বিদ্যমান, সেখানে যারা এই মাধ্যমে অভিজ্ঞতা এবং যথাযথ যোগ্যতা ছাড়া প্রতিষ্ঠিত হতে চায়, তারা অনেক সময়ই জেনে শুনে বিপদে পা বাড়ায়। অন্যান্য মরণ নেশার মত বিখ্যাত হবার নেশাও একটি মরণ নেশা- অন্তত আমাদের দেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে। আর এই সুযোগটি লুফে নেয় কিছু তথাকথিত শিল্পপতির বখাটে ছেলেরা। যেমন আপন জুয়েলার্সের বিজ্ঞাপনে সুযোগ দেয়ার নাম করে অনেক অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া যায় এই প্রতিষ্ঠাটির মালিকের ছেলের বিরুদ্ধে। আপনি প্রশ্ন করতে পারেন, এদের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ থাকলে তা কেন আগে প্রকাশিত হয় নি? এর জবাব হচ্ছে, যারা প্রভাবশালীদের রেফারেন্স ব্যবহার করে 'উপকৃত' হয়েছেন, তারা এই ব্যাপারে অভিযোগ করতে যাবেন কোন দুঃখে? আধুনিক যুগে 'কমিউনিকেশন' বা 'লিংক' হচ্ছে অন্যতম ব্যবসায়িক পুঁজি। আর যারা কিছু পান নি, তারা অনেকেই ক্ষোভে, দুঃখে নিজেরাই প্রতারিত হয়ে সরে গেছেন, কেউ বা নিজের 'ক্ষতিপূরণ' বুঝে নিয়েছেন অথবা কাউকে বেঘোরে প্রাণ হারাতে হয়েছে। উদহারন মডেল তিন্নী। ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর খুন হন তখনকার উঠতি মডেল তিন্নি। এই খুনের ব্যাপারে যাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে তিনি হলেন - জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক অভি। এই ঘটনা ঘটিয়েই তিনি কানাডায় পালিয়ে চলে যান এবং বর্তমানে সেখানেই অবস্থান করছেন। আজকে যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এত সক্রিয় না থাকতো, শক্তিশালী না হতো, তাহলে আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলেও হয়ত এতদিনে বিদেশে পাড়ি জমাতো। আমার লেখা পড়ে যদি মিডিয়ায় কাজ করা সকলের প্রতি বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হয়,তাহলে আমি দুঃখিত। কেননা, আমি বিশ্বাস করি, আমাদের মিডিয়াতে এখনও দৃষ্টান্ত হবার মত অনেক শিল্পী আছেন, যারা শুধুমাত্র তাদের নিজস্ব যোগ্যতায় এবং গুনে এই জগতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। ইদানীং আমি আরো একটি অদ্ভুত ব্যাপার লক্ষ্য করেছি। আমাদের তরুণ তরুণীরা তাদের জীবনসঙ্গী বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে খুব ভুল কিছু 'প্যারামিটার' সেট করেছেন। এই ধরনের ঘটনাগুলো বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। যেমন, আমি অনেককেই দেখেছি, যারা শুধু মাত্র আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য 'বড়লোক' বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ড বেছে নিচ্ছে। যারা সুযোগসন্ধানী আছেন, তারা এদের মনোভাব বুঝতে পেরে সুযোগের সদ্ব্যবহার করে ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে। এই সকল অনৈতিক মনোভাব থেকে পারিবারিক অথবা শিক্ষার আলোকেই সরে আসতে হবে। নতুন খবরের শিরোনাম হওয়া অল্প কিছুদিন বাকি। কারন, একদল ক্ষুধার্ত হায়েনার মাঝে আপনি চলাফেরার স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে হেটে যেতে পারেন না। অন্তত লজিক সেটা বলে না। যাইহোক, চলুন আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত একটি ধর্ষণ ঘটনা সম্পর্কে জানা যাক। ঘটনাটি নিম্নরুপঃ সম্প্রতি বনানীতে জন্মদিনের ঘটনায় আরো একটি মেয়ে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে এক শিল্পপতির ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। পত্রিকা এবং অন্যান্য সোর্স মারফত যা জানা গেলো তা হচ্ছে - ভিকটিম রাত সাড়ে ১০ টায় ঐ শিল্পপতির বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়ে ভিকটিম জন্মদিন অনুষ্ঠানের কোন আয়োজন না দেখে ফিরে যাওয়ার সময় তাকে নেশা জাতীয় জিনিস খাইয়ে ছেলেটি ধর্ষণ করে এবং রাত তিনটার সময় তাকে বাসা থেকে বের করে দেয়া হয়। ভাগ্যভালো,এখানে ভিকটিম দেরী করেন নি, তিনি মঙ্গলবারের ঘটনায় বুধবারে গিয়েই মামলা করেছেন। মামলার এজাহারে অবশ্য উল্লেখ্য করা হয়েছে যে, ছেলেটি ইতিপুর্বের বিবাহের কথা বলে তাকে ধর্ষণ করেছে। জানা গেছে, ভিকটিম একজন অভিনয় শিল্পী। হিন্দুর বিশ্বাসে দূর্গা দশভূজা দেবী সমগ্র জগত জুড়ে। প্রতিষ্ঠায় ন্যায়, কৃতীত্ব অসুর বধে। ভক্তের মঙ্গল বিধানে আসেন দেবী শরতের কালে। গনেশ কার্তিক লক্ষ্মী স্বরসতি শিব স্বামী ও সন্তান নিয়ে কৈলাশেতে বাস সকল দেবতা-দেবী পরিবারে সব, পুঁজা ও... ...বাকিটুকু পড়ুন সামহোয়‍্যার ইন...ব্লগ বাঁধ ভাঙার আওয়াজ, মাতৃভাষা বাংলায় একটি উন্মুক্ত ও স্বাধীন মত প্রকাশের সুবিধা প্রদানকারী প্ল‍্যাটফমর্। এখানে প্রকাশিত লেখা, মন্তব‍্য, ছবি, অডিও, ভিডিও বা যাবতীয় কার্যকলাপের সম্পূর্ণ দায় শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রকাশকারীর... © সামহোয়্যার ইন...নেট লিমিটেড ব্যবহারের শর্তাবলী গোপনীয়তার নীতি বিজ্ঞাপন শিরোনামে একটি উপন্যাসের নাম ব্যবহারের উদ্দেশ্য অসচেতন পাঠকের সাথেও এই লেখিকাকে পরিচয় করিয়ে দেয়া। বিটিভিতে "হাঙ্গর নদী গ্রেনেড" সিনেমাটি কখনো দেখেননি এমন কাউকে খুজে পাওয়া দুষ্কর। এই সিনেমাটি তৈরি হয়েছিল সেলিনা হোসেনের লেখা উপন্যাস অবলম্বনে। বাংলা একাডেমীর সাথে তিনি যুক্ত ছিলেন। বাংলা একাডেমী থেকে তাঁর লেখা ও সম্পাদিত একাধিক অভিধান প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে লেখকদের জীবনী নিয়ে লেখা চরিতাভিধান উল্লেখযোগ্য। এটা পড়লে বিসিএস এ বাংলা সাহিত্যের সব প্রশ্নই আশা করা যায় কমন পড়বে। নবম ও দশন শ্রেণের পাঠ্যবই এর আলোকে সেলিনা হোসেনের পরিচয় নিচের ভিডিও থেকে দেখে নিন-
 
This website was created for free with Own-Free-Website.com. Would you also like to have your own website?
Sign up for free